কাশ্মীরে ফের উত্তপ্ত নিয়ন্ত্রণরেখা!
প্রতিদিন রাত নামলেই গুলি। পরপর পাঁচটি রাত কাশ্মীরের আকাশে ফের প্রতিধ্বনিত হল যুদ্ধের আওয়াজ। পহেলগাঁও কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভাঙল পাকিস্তানি সেনা। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুল্লা এবং আখনুর সেক্টর সংলগ্ন নিয়ন্ত্রণরেখার ওপার থেকে বিনা প্ররোচনায় শুরু হয় গুলিবর্ষণ। এর কড়া জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও।
উত্তেজনার উৎস পহেলগাঁও কাণ্ড
গত সপ্তাহে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ২৬ জন নিরস্ত্র মানুষ, যাদের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন পর্যটক। এই ঘটনায় জড়িত ছিল স্থানীয় ও পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিদের একটি দল, এমনটাই সন্দেহ গোয়েন্দাদের। হামলার পরই দিল্লিতে জরুরি বৈঠক ডেকে কড়া পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
চুক্তি ভাঙা ও কূটনৈতিক যুদ্ধ
পাকিস্তানের লাগাতার আগ্রাসী আচরণের জবাবে ভারত পাক নাগরিকদের ভিসা বাতিল, অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ, এবং ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করার মতো পদক্ষেপ নেয়। এমনকি পাকিস্তানি দূতাবাসের প্রতিরক্ষা আধিকারিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
পাকিস্তানের পাল্টা হুঁশিয়ারি
এত কিছুর পরেও চুপ থাকেনি পাকিস্তান। ইসলামাবাদে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে তারা ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ ঘোষণা করে। জলপ্রবাহ বন্ধ করা হলে তা ‘যুদ্ধ ঘোষণা’-র সমান বলে হুঁশিয়ারি দেয় তারা। এমনকি শিমলা চুক্তি বাতিলের কথাও তোলে, যার ভিত্তিতেই ১৯৭২ সালে নিয়ন্ত্রণরেখার অস্তিত্ব গড়ে উঠেছিল।
সীমান্তে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ?
ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, গত পাঁচ রাত ধরে পরপর গুলিবর্ষণ চালিয়েছে পাকিস্তান। বিশেষ করে রাত নামলেই গুলি শুরু হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। সেনা এক বিবৃতিতে বলেছে,
“সোমবার রাতের ঘটনায় আমরা পরিমিত এবং কার্যকর জবাব দিয়েছি।”
অতীতের পুনরাবৃত্তি?
এ ঘটনা নতুন নয়। পাকিস্তানের তরফে আগেও বারবার সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। কিন্তু এবার তার সময়, ধরন এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট—সবই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ ছড়াচ্ছে এই বারুদের গন্ধ।
শেষ কথা
যখন দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে, তখন সীমান্তে এমন আগুনঘোলা পরিস্থিতি অশনি সঙ্কেত। কাশ্মীর উপত্যকার মানুষ আজ আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন। গুলির শব্দে ভেঙে যাচ্ছে ঘুম, কেঁপে উঠছে হৃদয়। প্রশ্ন উঠছে—এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির শেষ কোথায়? শান্তির পথ কি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল? নাকি এখনও কিছু আলো দেখা যায় ভবিষ্যতের দিগন্তে?
বিএসএফ কর্তাদের আশ্বাসেও থেমে নেই উৎকণ্ঠা, সোমবার পঞ্জাব যাচ্ছেন পূর্ণমের স্ত্রী