Monday, December 1, 2025

পহেলগাঁও রক্তাক্ত, লশকরের ছায়ায় ভয়াল হামলা—পর্যটক হত্যাকাণ্ডে নড়ে উঠল কাশ্মীর

Share

পহেলগাঁও রক্তাক্ত, লশকরের ছায়ায় ভয়াল হামলা!

কাশ্মীরের শান্ত সৌন্দর্য রক্তাক্ত। মঙ্গলবার দুপুরে অনন্তনাগ জেলার বৈসরন উপত্যকায় ঘটে গেল ভয়াবহ এক জঙ্গি হামলা। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন নিরীহ পর্যটক, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গেরও তিন বাসিন্দা। হামলার দায় স্বীকার করেছে লশকর-ই-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। দেশের বুকে ফের একবার নেমে এল আতঙ্ক, প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়েও।

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে এই মর্মান্তিক ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে রাতারাতি কাশ্মীরে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার সকালে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি দেখা করেন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে, শোনেন তাঁদের কথা, আশ্বাস দেন পাশে থাকার।

এই ঘটনার তদন্তে নামে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (NIA)। ইতিমধ্যেই একজন আইজি-র নেতৃত্বে গোয়েন্দাদের একটি দল পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে। স্থানীয় পুলিশকে সহায়তা করার পাশাপাশি পুরো হামলার পেছনের ছক খোলসা করাই তাঁদের মূল লক্ষ্য।

টিআরএফ নামটি নতুন নয়। ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পরে এই সংগঠনটির উত্থান ঘটে। লশকরের ছায়া সংগঠন হিসেবে কাশ্মীরি জঙ্গি সাজ্জাদ গুলের হাত ধরে গড়ে ওঠে টিআরএফ। সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট—কাশ্মীরকে অশান্ত করা, ভারতের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানা। তাদের হামলার মূল লক্ষ্য হয়ে ওঠে পরিযায়ী শ্রমিক এবং কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। গত বছর রেইসি জেলায় পুণ্যার্থীদের বাসে হামলা চালিয়ে অন্তত ১০ জনকে খুন করে এই একই গোষ্ঠী।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, টিআরএফের এত দ্রুত বিস্তার এবং কার্যকলাপের পেছনে ছিল পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ মদত। ভারত সরকার ২০২৩ সালেই এই সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’ হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারা যে এখনও সক্রিয় এবং ভয়াবহ ভাবে আঘাত হানতে সক্ষম, পহেলগাঁওর ঘটনা তার নির্মম প্রমাণ।

কাশ্মীরের আকাশে যেন ফের ঘনিয়ে এল অন্ধকার। শান্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত পহেলগাঁওতে পর্যটকদের রক্তপাত গোটা দেশকে শোকাহত করেছে। নিরাপত্তার ঘাটতি, জঙ্গিদের দৌরাত্ম্য ও সীমান্তপারের মদত—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

এই রকম সময়েই প্রয়োজন নির্ভরযোগ্য তদন্ত, কঠোর নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা। অমিত শাহের উপস্থিতি ও কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ হয়তো কিছুটা আশা জাগায়। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—আর কতবার কাশ্মীরকে রক্তে ভিজতে হবে? আর কতবার নিরীহ মানুষ সন্ত্রাসের বলি হবেন? উত্তরের অপেক্ষায় দেশ।

ক্যাস্টর অয়েল চুলের জন্য চমৎকার, তবে কীভাবে ব্যবহার করবেন? জানুন ৫ সহজ উপায়

Read more

Local News