পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য!
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তার মধ্যেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন ভোজপুরির জনপ্রিয় লোকগায়িকা নেহা সিংহ রাঠোর। সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্টে কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে মন্তব্য করায় তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হয়েছে।
নেহার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন, যেখানে সরাসরি নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ করে সাম্প্রতিক পহেলগাঁও হামলাকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতার ফল বলে দাবি করেন। ওই ভিডিয়োয় নেহা বলেন, ‘‘যিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন বলে দাবি করেন, তিনি নিজেই নিজের দেশে সন্ত্রাসী হামলা আটকাতে ব্যর্থ।’’
শুধু মোদী নয়, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়েও সরব হন নেহা। তাঁর কথায়, ‘‘আজ শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা অপ্রাসঙ্গিক। দেশে এখন জাতীয়তাবাদের নামে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি চলছে। নির্বিচারে মানুষ খুন হচ্ছে।’’
তাঁর বক্তব্য আরও বিতর্কিত হয় যখন তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী পহেলগাঁও হামলাকে ব্যবহার করে ভোটের প্রচারে যাবেন, যেমনটা নাকি ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর হয়েছিল। এই মন্তব্যের পরেই নেহার পোস্ট পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
লখনউয়ের হজরতগঞ্জ থানায় নেহার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন এক ব্যক্তি, অভয়প্রতাপ সিংহ। তাঁর অভিযোগ, নেহার পোস্ট জাতীয় অখণ্ডতার জন্য হুমকি, এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে পারে। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম নেহার বক্তব্যকে ভারতের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
ভোজপুরির এই লোকশিল্পী অবশ্য বিতর্কে নতুন নন। নেহা তাঁর গান ও রাজনৈতিক ব্যঙ্গের জন্য আগে থেকেই পরিচিত। ‘বিহার মে কা বা’, ‘ইউপি মে কা বা’ কিংবা ‘এমপি মে কা বা’-র মতো জনপ্রিয় গানগুলিতে তিনি রাজ্যের অব্যবস্থা, দুর্নীতি ও শাসকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন।
কৈমুর জেলার মেয়ে নেহা ২০১৯ সালে ভোজপুরি গানে নিজের কেরিয়ার শুরু করেন। সাধারণ মানুষের সমস্যা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বেকারত্ব নিয়ে গান লিখে সমাজমাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। ২০২০ সালের করোনা লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা তুলে ধরে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলও খুলেছিলেন।
নেহার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মামলা হয়েছে। কখনও গানে যোগী আদিত্যনাথকে কটাক্ষ করার অভিযোগ, কখনও দলিত নির্যাতন ইস্যুতে সরব হওয়ার পর তাঁকে আইনি জটিলতায় পড়তে হয়েছে।
এই মুহূর্তে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী মামলা হয়েছে। অভিযোগ— সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো, জনশান্তি বিঘ্নিত করা এবং দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানা। নেহার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই যে সহজ হবে না, তা বলাই বাহুল্য।
বিএসএফ কর্তাদের আশ্বাসেও থেমে নেই উৎকণ্ঠা, সোমবার পঞ্জাব যাচ্ছেন পূর্ণমের স্ত্রী

