পরীক্ষায় সাফল্য কীভাবে?
পরীক্ষায় ভাল ফল পেতে শুধুমাত্র কঠোরভাবে পড়া যথেষ্ট নয়, এর জন্য প্রয়োজন সঠিক অভ্যাস এবং নিয়মিততার। তবে এই সাফল্য অর্জন করতে কীভাবে মনোযোগী হওয়া যায় এবং কীভাবে সঠিক অভ্যাস গড়ে তোলা যায়, তা নিয়ে মনোবিদেরা নানা পরামর্শ দিয়েছেন।
সঠিক রুটিন গঠন
সফল পড়াশোনার জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনোবিদ মোহিত রণদীপ বলেন, “ঘড়ি ধরে নির্দিষ্ট সময়ে পড়তে বসলে মনোযোগের ক্ষেত্রে সহায়তা হয়।” তবে এটি এক দিনে অর্জনযোগ্য নয়; দিনের পর দিন একই সময়ে পড়তে বসলে ধীরে ধীরে এটি অভ্যাসে পরিণত হয়।
ভিতরের আগ্রহ
শুধু বাহ্যিকভাবে পড়াশোনার জন্য চাপ না থাকলে এবং যখন একজন পড়ুয়া তার পড়ার বিষয়ে কৌতূহলী হয়, তখনই সাফল্য আসবে। অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানান, “ভাল ফল পেতে হলে পড়াশোনার ইচ্ছাটা ভিতর থেকে আসা দরকার। কৌতূহল এবং স্পৃহা তৈরি করা গেলে পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়ে।”
নিয়মানুবর্তিতা
পরীক্ষার সময়ে অধিক চাপ এবং উদ্বেগ থেকে বাঁচতে নিয়মিতভাবে পড়াশোনা করা উচিত। “সময় মতো কাজ না করলে চাপ এসে পড়ে, যা পরীক্ষার সময়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়,” বলেন মোহিত রণদীপ। অর্থাৎ, পড়া পিছিয়ে রাখলে শেষ মুহূর্তে চাপ বেড়ে যায়।
লক্ষ্য স্থির করা
দুটি মাস পরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিলে, প্রতিটি বিষয় কতটা সময় দেওয়া হবে, তা আগে থেকেই নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত। তবে লক্ষ্য বাস্তবসম্মত হতে হবে, যেমন এক দিনে ২-৩টি বিষয় পড়া যেতে পারে, কিন্তু ৫টি বিষয় একসঙ্গে পড়ার লক্ষ্য ঠিক করা উচিত নয়।
সঠিক পড়ার জায়গা
পড়াশোনা করার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান থাকা গুরুত্বপূর্ণ। অনিন্দিতা বলেন, “প্রতি দিন একটি নির্দিষ্ট টেবিল বা চেয়ার থাকলে, মনোযোগ বজায় রাখা সহজ হয়।” ঘরের শোবার জায়গা ব্যবহার করলে পড়াশোনার মনোযোগ ভেঙে যেতে পারে।
মোবাইল ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা
আজকের দিনে মোবাইলের রিলস, ভিডিও বা ওয়েব সিরিজের প্রতি আকর্ষণ অতি প্রবল। তবে, পড়ার আগে মোবাইলের ব্যবহার কমানো দরকার। অনিন্দিতা বলেন, “মোবাইলের প্রতি আকর্ষণ অনেক সময় মনোযোগ হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই পড়ার সময় নির্দিষ্ট মোবাইল ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করতে হবে।”
প্রাণায়াম এবং ধ্যান
পড়াশোনায় মনোযোগ বজায় রাখতে প্রাণায়াম এবং ধ্যানের অভ্যাসও সাহায্য করতে পারে। এটি মানসিক চাপ কমাতে এবং দীর্ঘসময় পড়তে সহায়ক।
সর্বোপরি, ভালো ফলের জন্য শুধুমাত্র পড়তে বসা নয়, সঠিক অভ্যাস ও নিয়মিততা অত্যন্ত জরুরি। সফলতার জন্য এগুলির সমন্বয়ই সাফল্যের চাবিকাঠি।