Friday, March 21, 2025

পরিচালকের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ! নুসরতের সই জাল, কী বলছেন প্রযোজকরা?

Share

পরিচালকের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ!

বাংলা চলচ্চিত্র জগতে বড়সড় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে পরিচালক রাজর্ষি দে-কে কেন্দ্র করে। তাঁর আসন্ন ছবি ‘ও মন ভ্রমণ’ নিয়ে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলেছেন ছবির দুই প্রযোজক অরিন্দম ঘোষ এবং প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য। শুধু তাই নয়, পরিচালক নাকি অভিনেত্রী নুসরত জাহানের সই জাল করেও ভুয়া চুক্তিপত্র তৈরি করেছেন! এই ঘটনায় দুই পক্ষই এখন আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটতে চলেছেন।

৭৩ লক্ষ টাকার তছরুপের অভিযোগ

এই ছবিতে অভিনয় করছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, নুসরত জাহান, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় এবং অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ একঝাঁক শিল্পী। ইতিমধ্যেই ১০ দিনের শুটিং সম্পন্ন হয়েছে, তবে চার দিনের কাজ এখনও বাকি। কিন্তু এর মধ্যেই পরিচালক ও প্রযোজকদের মধ্যে তীব্র বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রযোজক অরিন্দম ও প্রিয়াঙ্কার দাবি, রাজর্ষি তাঁদের ৭৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাঁরা জানান, ছবির জন্য ১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা বাজেট নির্ধারিত হয়, যার মধ্যে শুটিংয়ের খরচের ৮৫% টাকা ছবি মুক্তির পর চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ফেরত দেবে। সেই আশায় তাঁরা ধাপে ধাপে ৮০ লক্ষ টাকা রাজর্ষিকে দেন। কিন্তু যখন তাঁরা খরচের হিসাব চাইতে শুরু করেন, তখনই পরিচালকের আসল চেহারা সামনে আসে!

তাঁদের আরও অভিযোগ, রাজর্ষি শুরু থেকেই পুরো অর্থ একবারে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা ধাপে ধাপে টাকা দিতে চেয়েছিলেন, যা পরিচালকের পছন্দ হয়নি। একসময় পরিচালক তাঁদের দেওয়া চারটি চেক একসঙ্গে ব্যাংকে জমা দেন, যার ফলে সব কটি চেক বাউন্স করে এবং অর্থ লেনদেনের বিরোধ তীব্র আকার নেয়।

নুসরতের সই জাল! কী বলছেন অভিনেত্রী?

এই ঘটনার আরেকটি গুরুতর দিক হল নুসরত জাহানের চুক্তিপত্র নিয়ে বিতর্ক। অভিনেত্রী নুসরত এই ছবির একজন প্রযোজকও। প্রযোজকরা জানান, রাজর্ষি তাদের জানিয়েছিলেন যে, নুসরত ছবিটি স্টার জলসায় বিক্রির চেষ্টা করবেন। তবে সেই চুক্তিপত্রে যে পারিশ্রমিকের কথা বলা হয়েছিল, নুসরত জানান তিনি এত টাকা পাননি! অভিনেত্রীর দাবি, রাজর্ষি তাঁর সই জাল করে ভুয়া চুক্তিপত্র বানিয়েছেন!

শুধু নুসরতই নন, জি বাংলা কর্তৃপক্ষও এই ভুয়া চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে দাবি করেছেন প্রযোজকরা।

রাজর্ষির পাল্টা দাবি

যদিও রাজর্ষি দে এই সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি যদি এমন প্রতারক হতাম, তাহলে এতগুলো সফল ছবি কীভাবে পরিচালনা করলাম? কেন বাংলার শীর্ষ অভিনেতারা আমার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী?”

তিনি দাবি করেন, ছবির বেশির ভাগ অভিনেতা ও কলাকুশলী তাঁদের পারিশ্রমিক পেয়ে গেছেন। শুধু কয়েকজনের টাকা বাকি রয়েছে, যা ধাপে ধাপে পরিশোধ করা হবে। এ বিষয়ে সমস্ত প্রমাণ তিনি ইমপা (ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন)-তে জমা দিয়েছেন।

আইনি লড়াই এবং ইন্ডাস্ট্রির প্রতিক্রিয়া

এই বিতর্কের ফলে রাজর্ষি এবং প্রযোজকরা উভয়ই আইনি পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতিমধ্যে ইমপা, পরিচালক গিল্ড ও ফেডারেশন-এর কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে এই মুহূর্তে সংগঠনগুলি সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে নারাজ, কারণ বিষয়টি বিচারাধীন।

এদিকে, ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কানাঘুষো শুরু হয়েছে যে, শুধুমাত্র কলকাতার শুটিংয়ে ৮০ লক্ষ টাকা খরচ হওয়া সম্ভব নয়। তাহলে এই টাকা কোথায় গেল? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে প্রযোজকরা এখন অপেক্ষা করছেন ইমপার পরবর্তী সিদ্ধান্তের।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

এই বিতর্কের ফলে ছবিটির ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে। পরিচালক-প্রযোজকদের মধ্যে আইনি লড়াই কতদূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে এটি নিঃসন্দেহে এক বড়সড় বিতর্ক, যা সামনের দিনে আরও নতুন মোড় নিতে পারে।

সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানের উদ্বেগ, ইউনূস প্রশাসনের কড়া প্রতিক্রিয়া

Read more

Local News