পটনার অনশনমঞ্চ থেকে প্রশান্ত কিশোরকে গ্রেফতার
পটনার গান্ধী ময়দানের অনশনস্থল থেকে জন সুরাজ দলের প্রধান প্রশান্ত কিশোরকে (পিকে) সোমবার ভোরে গ্রেফতার করল বিহার পুলিশ। অনশনরত অবস্থায় পিকে-কে জোর করে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয়। পরে তাঁকে পাটনার এমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পাটনার জেলাশাসক চন্দ্রশেখর সিংহ নিশ্চিত করেছেন যে প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাঁদের আদালতে পেশ করা হবে।
অনশন ও পুলিশি পদক্ষেপ:
২ জানুয়ারি থেকে বিহারের সরকারি চাকরির পরীক্ষায় (বিপিএসসি) অনিয়মের অভিযোগ তুলে অনশনে বসেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে আয়োজনের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। সোমবার ছিল তাঁর অনশনের চতুর্থ দিন। এই সময়, পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পিকে-র সমর্থকদের অভিযোগ, তাঁদের নেতাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হচ্ছে না।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, অনশনস্থল থেকে পুলিশ পিকে-কে জোরপূর্বক অ্যাম্বুল্যান্সে তোলার সময় তাঁর সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। এমনকি কেউ কেউ দাবি করেছেন, পুলিশের এক আধিকারিক তাঁকে চড়ও মেরেছেন। এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যদিও তার সত্যতা এখনও যাচাই করা হয়নি।
পরীক্ষা বাতিলের দাবি এবং অনিয়মের অভিযোগ:
প্রশান্ত কিশোর দীর্ঘদিন ধরে বিহারের চাকরির পরীক্ষাগুলিতে কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন। বিশেষত, ৭০তম বিপিএসসি পরীক্ষার অনিয়ম নিয়ে তিনি সরব। তাঁর দাবি, বিহারের চাকরির পরীক্ষাগুলি দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মে ভরা। চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি সরকারের উদাসীনতা নিয়ে তিনি বারবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে আক্রমণ করেছেন। পিকে অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে রাজনৈতিক কাজে যেতে পারেন, কিন্তু নিজের রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেন না।
২৯ ডিসেম্বর রাতে গান্ধী ময়দানে চাকরিপ্রার্থীদের এক জমায়েতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল। পিকে সেই জমায়েতে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের অভিযোগ, তিনি বিক্ষোভকারীদের উস্কানি দিয়েছিলেন, যা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এর পর ২ জানুয়ারি থেকে তিনি আমরণ অনশনে বসেন।
সমর্থন ও সমালোচনা:
বিহারের চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন রাজ্যের অনেক শিক্ষাবিদ এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের সমর্থন পেয়েছে। পিকে-র অনশনে বিপুল সংখ্যক সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, পরীক্ষা বাতিল করে নতুনভাবে স্বচ্ছ নিয়মে পরীক্ষা নেওয়া হোক।
পিকে-র গ্রেফতারের পর রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিরোধীরা সরকারের বিরুদ্ধে চরম দমননীতির অভিযোগ তুলেছে। তাঁদের বক্তব্য, সরকারের ব্যর্থতাকে আড়াল করতে পুলিশি শক্তি ব্যবহার করে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
শেষ কথা:
প্রশান্ত কিশোরের এই অনশন এবং গ্রেফতারের ঘটনা শুধুমাত্র বিহারের চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা নয়, বরং রাজ্যের প্রশাসনিক অব্যবস্থার উপর একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে এখন কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং আদালতে পিকে ও তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সবার।
চিনের পর হংকংয়ে হানা দিল এইচএমপিভি! আতঙ্ক না ছড়িয়ে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ কেরলের