কসবাকাণ্ডে জনস্বার্থ মামলা, হাই কোর্টে দ্রুত শুনানির আর্জি!
কসবার কলেজে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ক্রমে চাপ বাড়ছে প্রশাসনের উপর। এবার কলকাতা হাই কোর্টে একাধিক আইনজীবী এই ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়েরের জন্য আবেদন জানান। তাঁরা শুধু মামলা দায়েরেই থেমে থাকেননি, মামলার দ্রুত শুনানিরও অনুরোধ জানিয়েছেন। আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ, বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস স্পষ্ট জানিয়ে দেন— আগে মামলা দায়ের করুন, বিপরীত পক্ষকে নোটিস পাঠানো হোক, তারপর আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।
ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে বৃহস্পতিবার এই মামলাগুলির শুনানি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে ছিলেন আইনজীবী সৌম্যশুভ্র রায় এবং সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের দাবি, অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতির নজরদারিতে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত শুরু হোক। পাশাপাশি, রাজ্যের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও আর্জি জানান তাঁরা। তাঁদের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব— প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক ভাবে বসানো হোক সিসি ক্যামেরা।
পুলিশি তদন্তের অগ্রগতি অনুযায়ী, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জন কলেজের বর্তমান ছাত্র, একজন প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে অস্থায়ী কর্মী— যিনি মূল অভিযুক্ত। সঙ্গে ধরা হয়েছে কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও। এই তদন্ত চালাচ্ছেন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষালের নেতৃত্বাধীন একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)।
নির্যাতিতার অভিযোগে উঠে এসেছে নির্মম এক চিত্র। তাঁর কথায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত তাঁকে নির্মমভাবে নিপীড়ন করা হয়। প্রথমে তাঁকে ইউনিয়ন রুমে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়, পরে নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে সম্পূর্ণ নির্যাতন চালানো হয়। এই সময়কার সাড়ে সাত ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে এসেছে। ফরেন্সিক নমুনাও সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত ও নির্যাতিতা, উভয়েই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র সঙ্গে যুক্ত। ফলে বিষয়টি রাজনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। যদিও নির্যাতিতার পরিবার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তাঁরা কলকাতা পুলিশের তদন্তেই আস্থা রাখছেন, সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছেন।
এই জনস্বার্থ মামলা যেন কেবল রাজনৈতিক লাভালাভের হাতিয়ার না হয়ে, প্রকৃত বিচার এবং ভবিষ্যতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিরাপত্তার মান উন্নয়নের পথ খুলে দেয়, এই আশা রাখছেন সাধারণ মানুষ।
‘আমার জীবনের চালিকাশক্তি তুমি’ – জন্মদিনে রুক্মিণীকে আদর করে দেব দিয়েছে স্পেশাল শুভেচ্ছা

