Friday, April 25, 2025

নিয়োগ দুর্নীতিতে জামিন: ইডির পর এবার সিবিআইয়ের মামলাতেও মুক্তি পেলেন কুন্তল ঘোষ

Share

কুন্তল ঘোষ নিয়োগ মুক্তি পেলেন

কেরালার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যুব তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা কুন্তল ঘোষের নাম দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ইডি এবং সিবিআইয়ের দায়ের করা একাধিক মামলায় দীর্ঘ ২৩ মাস জেলবন্দি থাকার পর, এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জামিন পেলেন কুন্তল। তবে, শর্তসাপেক্ষে দেওয়া হয়েছে এই জামিন।

ইডি এবং সিবিআইয়ের মামলা

নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল। অভিযোগ ছিল, চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় এবং বিপুল অঙ্কের অবৈধ লেনদেনের। পরে সিবিআইয়ের তদন্তেও তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক প্রমাণ মেলে।

ইডির তদন্ত অনুযায়ী, প্রায় ৩২৫ জন শিক্ষক প্রার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন কুন্তল। সিবিআইয়ের দাবি অনুযায়ী, এই টাকার পরিমাণ আরও বেশি, যা প্রায় ১৯ কোটি টাকার কাছাকাছি। শুধু তাই নয়, প্রার্থীদের যোগ্য প্রমাণ করতে ভুয়ো ওয়েবসাইট এবং ইমেল আইডি ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমেই চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডেকে পাঠানো হত।

সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত

গত ২০ নভেম্বর কুন্তলকে ইডির মামলায় জামিন দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। এবার সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় তাঁকে জামিন মঞ্জুর করল। তবে শীর্ষ আদালত বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে।

জামিনের শর্ত:

  1. কুন্তলকে তদন্তকারী সংস্থার অনুমতি ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ।
  2. মামলা বিচারাধীন থাকাকালীন তিনি কোনো সরকারি পদ গ্রহণ করতে পারবেন না।

নিয়োগ দুর্নীতির বিশদ বিবরণ

সিবিআইয়ের রিপোর্টে উঠে এসেছে, চাকরি দেওয়ার নাম করে কুন্তল প্রায় ৪ কোটি টাকা তুলেছিলেন। ভুয়ো ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের কসবার অফিসে। এই কাজে কুন্তলের সঙ্গে ছিলেন নীলাদ্রি ঘোষ এবং তাপস মণ্ডল।

সিবিআই আরও দাবি করেছে, টেটে ফেল করা প্রার্থীদের যোগ্য প্রমাণ করতে ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছিল, যা দেখতে অবিকল আসল ওয়েবসাইটের মতো। এমনকি, ওএমআর শিট মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ‘এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি’-কে, যা নিয়মবহির্ভূত ছিল।

সিবিআইয়ের আপত্তি এবং আদালতের প্রতিক্রিয়া

সিবিআই কুন্তলের জামিনের বিরোধিতা করেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, কুন্তল মুক্তি পেলে মামলার প্রমাণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু আদালত জানায়, দীর্ঘ ২৩ মাস ধরে তদন্ত চললেও এখনো মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। তাই কুন্তলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলে রাখা অন্যায়।

শেষ কথা

কুন্তল ঘোষের জামিনে মুক্তি রাজ্য রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আদালতের শর্ত অনুযায়ী, তদন্ত প্রক্রিয়া চালু থাকবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এই জামিন কুন্তলকে আপাতত স্বস্তি দিলেও, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চূড়ান্ত রায় রাজ্যের প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Read more

Local News