নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে ‘কাকু’র অডিয়ো ফাঁস!
পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড়সড় মোড়। সিবিআই-এর চার্জশিটে উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর অডিয়ো ক্লিপ, যেখানে নাম জড়িয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্যের। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই অডিয়োতে বেআইনি নিয়োগ নিয়ে কথাবার্তা স্পষ্ট শোনা গিয়েছে।
১৫ কোটি টাকার দাবি! কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার বিস্ফোরক অভিযোগ
📌 সিবিআই-এর ২৮ পাতার চার্জশিট অনুযায়ী, ‘কালীঘাটের কাকু’ নামে পরিচিত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কাছ থেকে ১৫ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছিল।
📌 ২০১৭ সালে বেহালায় ‘কাকু’র বাড়িতে এক গোপন বৈঠকে এই চুক্তি হয়েছিল বলে দাবি করেছে সিবিআই।
📌 অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আরও দু’জন ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
📌 তদন্তকারীদের দাবি, বৈঠকের সময় কথোপকথন মোবাইলে রেকর্ড করেছিলেন কুন্তলের ঘনিষ্ঠ অরবিন্দ রায়বর্মণ।
📌 পরে সেই রেকর্ড ল্যাপটপে সংরক্ষণ করা হয়, যা পরবর্তীতে তদন্তে উঠে আসে।
অডিয়ো ক্লিপে কী রয়েছে?
সিবিআই-এর চার্জশিট অনুযায়ী, অডিয়ো ক্লিপে শোনা গিয়েছে—
🔹 নিয়োগ কেলেঙ্কারির পুরো পরিকল্পনা সুজয়কৃষ্ণ, শান্তনু ও কুন্তল মিলে করেছিলেন।
🔹 অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৫ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন, যা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন সুজয়কৃষ্ণ।
🔹 প্রতিটি প্রার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল, তাই নতুন করে টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
🔹 অভিষেক নির্দেশ দেন, টাকা না দিলে নিয়োগ আটকে দেওয়া হবে, প্রয়োজনে ওই প্রার্থীদের গ্রেফতার করানো হবে!
পার্থ-মানিকের ভূমিকা কী?
সিবিআই-এর চার্জশিট অনুযায়ী,
📌 নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত লেনদেন ও প্রক্রিয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মাধ্যমেই চালানো হতো।
📌 শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অভিষেক ও পার্থর মধ্যে মতবিরোধ চলছিল বলে অডিয়ো ক্লিপে উল্লেখ রয়েছে।
📌 সুজয়কৃষ্ণ ও তার সহযোগীরা দুই হাজার চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা তোলার ছক কষেছিলেন!
📌 এর মধ্যে পার্থ, মানিক ও অভিষেককে ২০ কোটি টাকা করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
📌 বাকিটা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার কথা হয়েছিল।
সিবিআইয়ের পদক্ষেপ ও তদন্তের অগ্রগতি
🔸 অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করতে সেটি সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।
🔸 সুজয়কৃষ্ণ, কুন্তল ও শান্তনুর কণ্ঠস্বর নমুনা দিল্লির বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
🔸 চার্জশিটের ১২ নম্বর পাতায় উল্লেখ রয়েছে, কীভাবে নিয়োগের নাম করে কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছিল।
🔸 হুগলির প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিষদের তৎকালীন সভাপতির নামও উঠে এসেছে এই কেলেঙ্কারিতে।
কেন অভিষেকের পরিচয় গোপন?
সিবিআই চার্জশিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম থাকলেও তাঁর পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি!
📌 কোথাও লেখা হয়নি তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী নাকি সরকারি দফতরের সঙ্গে যুক্ত।
📌 পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামের পাশে ‘প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী’ পরিচয় লেখা থাকলেও অভিষেকের ক্ষেত্রে শুধু নামটাই রয়েছে।
📌 এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
উপসংহার
এই অডিয়ো ফাঁসের পর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন মোড় নিয়েছে তদন্ত। সিবিআইয়ের চার্জশিটের তথ্য সামনে আসায় তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব চাপে পড়েছেন।
এখন দেখার, এই কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের ভবিষ্যৎ কী হয়!
শুরুতেই ছন্দহীন শামি, এক ওভারে ১১ বল! বুমরাহের রেকর্ড ভাঙলেন বাংলার পেসার