Saturday, February 8, 2025

নিজেরাই শূন্য, কেজরীবাল ও সিসৌদিয়ার পতন, আতিশীর কান ঘেঁষে জয়!

Share

কেজরীবাল ও সিসৌদিয়ার পতন!

দিল্লির নির্বাচনে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের বিভক্তির সুবিধা পেল বিজেপি। আম আদমি পার্টি (আপ) ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পাশাপাশি তাদের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা, অরবিন্দ কেজরীবাল এবং মণীশ সিসৌদিয়া, পরাজিত হয়েছেন। তবে সংকটের মধ্যেও কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছেন আতিশী মার্লেনা, যিনি কোনও মতে জয় ধরে রাখতে পেরেছেন।

কংগ্রেস-আপ বিভাজন: বিজেপির জন্য সুবর্ণ সুযোগ

লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে কংগ্রেস এবং আপের মধ্যে আসন ভাগাভাগি হলেও দিল্লি বিধানসভার ক্ষেত্রে সেই সমঝোতা হয়নি। কেজরীবাল আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করবেন না। সেই সিদ্ধান্তের ফলে দুই পক্ষই আলাদাভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং একে অপরের ভোট কাটায়। এই অবস্থার সবচেয়ে বড় সুবিধা পায় বিজেপি।

কেজরীবাল ও সিসৌদিয়ার হতাশাজনক পরাজয়

নয়াদিল্লি আসনে বিজেপির প্রবেশ সাহিব সিংহ কেজরীবালকে ৪,০৮৯ ভোটে পরাজিত করেন। এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী সন্দীপ দীক্ষিত ৪,২৫৪ ভোট পান, যা কেজরীবালের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়। অন্যদিকে, জঙ্গপুরা আসনে মণীশ সিসৌদিয়া বিজেপির তরবিন্দর সিংহের কাছে ৬৭৫ ভোটে পরাজিত হন। কংগ্রেসের ফরহাদ সুরি সেখানে ৭,৩৫০ ভোট পান, যা মণীশের হারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলাফল থেকে স্পষ্ট যে, কংগ্রেস-আপ ভোট বিভাজনের কারণে কেজরীবাল ও সিসৌদিয়া নিজেদের আসন হারান।

আতিশীর কঠিন জয়

কেজরীবাল এবং সিসৌদিয়া যেখানে হার মানলেন, সেখানে আতিশী মার্লেনা কান ঘেঁষে জয়লাভ করেছেন। কালকাজি আসনে বিজেপির রমেশ বিদুরিকে তিনি ৩,৫২১ ভোটে পরাজিত করেন। তবে কংগ্রেস প্রার্থী অলকা লাম্বাও ৪,৩৯২ ভোট পেয়েছেন, যা আতিশীর অবস্থানকে বিপজ্জনক করে তুলেছিল। ভোটগণনার প্রথম দিকে পিছিয়ে থাকলেও শেষ মুহূর্তের কিছু রাউন্ডে বড় ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে জয় নিশ্চিত করেন আতিশী।

‘ইন্ডিয়া’ জোটের ভিতরে ফাটল

গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকদের মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করেছিল। দিল্লির নির্বাচনে সেই বিভক্তি আরও প্রকট হয়ে ওঠে। কেজরীবাল এককভাবে লড়াইয়ের ঘোষণা দিতেই কংগ্রেস সরাসরি তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। দিল্লির কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন কেজরীবালকে ‘ফর্জীওয়াল’ বলে কটাক্ষ করেন এবং দাবি করেন যে ২০১৩ সালে আপকে সমর্থন করাই দিল্লিতে কংগ্রেসের পতনের প্রধান কারণ।

এই অবস্থার প্রভাব জাতীয় স্তরেও পড়ে। উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গেও কংগ্রেসের দূরত্ব বেড়ে যায়। ফলে, দিল্লির ভোটে অখিলেশের দল আপকে সমর্থন করে এবং কেজরীবাল-অখিলেশ যৌথ রোড শোও করেন রাজধানীতে।

কংগ্রেসের অবস্থান: নিজেরাই শূন্য হয়ে গেল!

দিল্লির নির্বাচনে কংগ্রেস একটিও আসন জিততে পারেনি, তবে তারা আপের গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতার পরাজয়ে ভূমিকা রেখেছে। নিজে শূন্য হয়েও কেজরীবাল ও সিসৌদিয়াকে পরাজিত করাই তাদের একমাত্র ‘সফলতা’। তবে রাজনৈতিকভাবে এটি কতটা লাভজনক হলো, তা ভবিষ্যৎই বলবে।

বিজেপির বড় জয়

দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরাট সুবিধা পেয়েছে। তাদের সংগঠিত প্রচার এবং কংগ্রেস-আপ বিভক্তির ফলে তারা বিরোধী ভোট বিভক্ত হওয়ার সুযোগ নেয়। কেজরীবাল ও সিসৌদিয়ার হারের ফলে আপের নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

এই নির্বাচনের ফলে দিল্লির রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আপের জন্য এটি শুধুমাত্র একটি নির্বাচনী হার নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি কঠিন সংকেত। আগামী দিনে এই পরাজয়ের কী প্রভাব পড়ে, সেটাই এখন দেখার বিষয়

রতন টাটার উইলে ‘রহস্যময়’ নাম! ৫০০ কোটি টাকার উত্তরাধিকারী মোহিনীমোহন দত্ত, কে তিনি?

Read more

Local News