Saturday, February 22, 2025

নিখোঁজ কিশোরের দেহ ১৯ দিন পর শনাক্ত: পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ

Share

নিখোঁজ কিশোরের দেহ ১৯ দিন পর

হাওড়ার নিশ্চিন্দার বাসিন্দা ১৭ বছরের কিশোর সায়ন নন্দী সপ্তমীর দিন বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়। গত ১৯ দিন ধরে তার সন্ধানে ছিল পরিবার ও পুলিশ। অবশেষে ১১ অক্টোবর সকালে বালি ও বেলুড় স্টেশনের মাঝের রেললাইনে তার দেহ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু, এতদিনেও পুলিশ সায়নের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। মঙ্গলবার পরিবার যখন পুলিশের সঙ্গে খোঁজে বেরিয়ে, তখনই তারা জানতে পারে, সায়নের দেহ মর্গে পড়ে আছে। এই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে ঢিলেমি ও গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে সায়নের পরিবার।

নিখোঁজের দিন থেকে মৃত্যুর রহস্য

সায়নের বাবা বিষ্ণু নন্দী জানিয়েছেন, সপ্তমীর রাতে শেষবার ফোন করে সায়ন জানিয়েছিল, সে শ্রীরামপুরে আছে এবং রাতেই বাড়ি ফিরবে। এরপর তার ফোন বন্ধ হয়ে যায় এবং পরিবারের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিষ্ণু জানান, “অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মর্গে গিয়ে দেখলাম, সেখানে ছেলের দেহ পড়ে রয়েছে। মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল এবং পুলিশ কেন এতদিনেও খোঁজ পেল না, কিছুরই উত্তর নেই।”

পুলিশের দাবি এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের পর জানানো হয়েছে, সায়নের দেহ উদ্ধার হয় বেলুড় জিআরপির মাধ্যমে। কিন্তু, মৃতের পরিচয় জানা না গেলে সায়নের দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের ধারণা, ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে সায়নের মৃত্যু হয়েছে। যদিও, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

হাওড়া সিটি পুলিশের দাবি, তারা প্রথম থেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করেছে। সায়নের ছবি ও তথ্য প্রতিটি থানায় পাঠানো হয়েছে এবং নিয়মিত তল্লাশি চালানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, “জিআরপি এতদিন মৃতের পরিচয় জানতে না পারায় দেহটি মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছিল। মঙ্গলবার নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ কিশোরের পরিবারের সঙ্গে খুঁজতে বেরিয়ে দেহটি শনাক্ত করিয়েছে।”

পরিবার ও পুলিশের মধ্যে মতবিরোধ

পরিবারের অভিযোগ, এতদিনেও সায়নের খোঁজ না পাওয়ার জন্য পুলিশ দায়ী। তারা জানতে চান, ১১ তারিখে দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ খবর পেল না কেন? বিষ্ণু বলেন, “আমরা প্রতিদিন অনেক খুঁজেছি। পুলিশ কি আমাদের কাছে আসতে পারত? কেন তারা আমাদের জানিয়েছিল না?”

সায়নের দেহের কাছে ছিল ১১০ টাকা এবং ট্রেনের হাওড়া স্টেশন থেকে শ্রীরামপুরের আপ-ডাউন টিকিট। পুলিশ জানায়, এই কারণেই তারা দেহটি শনাক্ত করতে পারেনি। কিন্তু, পরিবারের প্রশ্ন, সায়নের মোবাইল ফোন কেন পাওয়া যায়নি?

সায়নের পরিবারে শোক ও প্রতিবাদ

সায়নের পরিবারের কাছে এই ঘটনা শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি তাদের জীবনের একটি বিপর্যয়। তারা দাবি করছেন, ঘটনার যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত এবং পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। ১৯ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর মর্গে সায়নের দেহ খুঁজে পাওয়ায় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্তের দাবি তুলেছে।

Read more

Local News