পরপর দু’দিনে দুই বিশ্বকাপ এনে ইতিহাস গড়ল ভারত—ঢাকায় কবাডিতেও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন
পরপর দু’দিন! রবিবার দৃষ্টিহীন মহিলাদের ক্রিকেটে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে ডুবেছিল দেশ। আর তার মাত্র এক দিনের মাথায়, সোমবার আবারও ভারতীয় কন্যারা লিখে দিলেন নতুন ইতিহাস। এ বার মঞ্চ বাংলাদেশের ঢাকা, খেলা কবাডি—এবং ফলাফল একই: ভারতের মেয়েরাই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ফাইনালে চিনা তাইপেইকে ৩৫-২৮ পয়েন্টে হারিয়ে দ্বিতীয় বার মহিলা কবাডি বিশ্বকাপ জিতল ভারত।
❖ শুরু থেকে শেষ—খেলার রাশ ছিল ভারতের হাতে
পুরো প্রতিযোগিতা জুড়ে ভারতীয় দল দেখিয়েছে শৃঙ্খলা, শক্তি, গতি এবং স্নায়ুর নিয়ন্ত্রণ—যা আধুনিক কবাডিতে সাফল্যের মূল মন্ত্র। ফাইনালের ছবিটিও আলাদা ছিল না। শুরু থেকেই ভারত চেপে ধরে খেলেছে—
- প্রথমার্ধে অল্প ব্যবধানে লিড
- দ্বিতীয়ার্ধে মুহূর্তে বদলে যাওয়া আগ্রাসী কৌশল
- পয়েন্টের ব্যবধানে চাপ ধরে রেখে এগিয়ে চলা
- চিনা তাইপেইকে আর ম্যাচে ফেরার সুযোগই দেয়নি
রক্ষণভাগের দৃঢ়তা এবং আক্রমণের ধার—দুই দিকেই ভারত ছিল অনবদ্য।
❖ গ্রুপ লিগ থেকে ফাইনাল—অপরাজেয় ভারত
মহিলা কবাডিতে ভারতের দাপট পুরনো। ইতিহাস বলছে—
- গ্রুপ পর্বে তিনটি ম্যাচেই জয়
- প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে উত্তরণ
- সেমিফাইনালে শক্তিশালী ইরানকে হারানো
- এবং ফাইনালে চিনা তাইপেইকে চাপে ফেলে ট্রফি জয়
২০১২ সালে প্রথমবার আয়োজিত মহিলা কবাডি বিশ্বকাপেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। দীর্ঘ ১৩ বছর পর আবার সেই আসর, আর চ্যাম্পিয়নও সেই পুরনো শক্তি—ভারত।
❖ অধিনায়ক রিতু-রানা ও দলের সেরা তারকারা
এই বিশ্বজয়ের নেপথ্যে নেতৃত্ব ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামনে থেকে দলকে পথ দেখিয়েছেন—
- অধিনায়ক রিতু নেগি
- সহ-অধিনায়ক পুষ্পা রানা
এ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স—
- চম্পা ঠাকুর
- ভাবনা ঠাকুর
- সাক্ষী শর্মা
রেডিং হোক বা ডিফেন্স—ভারতের মেয়েরা এক মুহূর্তও প্রতিপক্ষকে স্বস্তি দেয়নি।
❖ ভারতীয় মেয়েদের ডাবল বিশ্বকাপ—দেশজুড়ে উচ্ছ্বাস
দৃষ্টিহীন মেয়েদের ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর মাত্র ২৪ ঘণ্টা পেরোতেই আরও একটি বিশ্বকাপ জিতে ভারতীয় কন্যারা দেশকে উপহার দিলেন গর্বের মুহূর্ত।
সমাজমাধ্যমে প্রশংসার বন্যা। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে সাধারণ মানুষ—সবাই উচ্ছ্বসিত।
❖ প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
নরেন্দ্র মোদী দলের প্রশংসায় লেখেন—
“বিশ্বকাপ জিতে দেশকে গর্বিত করার জন্য মহিলা কবাডি দলকে অনেক অভিনন্দন। তাঁদের জেদ, দক্ষতা এবং কঠোর পরিশ্রম লক্ষ লক্ষ মেয়েকে উৎসাহ দেবে।”
❖ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
অমিত শাহ বলেন—
“মহিলা কবাডি দল ইতিহাস গড়েছে। খেলাধুলোয় ভারতের প্রতিভার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া সত্যিই কঠিন। ভবিষ্যতের জন্য রইল শুভেচ্ছা।”
❖ উপসংহার
ভারতের মেয়েরা দেখিয়ে দিলেন—খেলার মাঠে তাঁদের প্রতিভা, শৃঙ্খলা ও আত্মবিশ্বাস আজ বিশ্বের সেরা শক্তিগুলোর মধ্যে পড়ে। রবিবার ক্রিকেটে, সোমবার কবাডিতে—দুই দিনে দুই বিশ্বকাপ, যা ভারতীয় খেলাধুলার ইতিহাসে বিরল এবং অনন্য মুহূর্ত।

