নারায়ণ গোস্বামীর আচরণে তৃণমূলের ক্ষোভ
অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর সাম্প্রতিক আচরণকে ঘিরে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে এক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কয়েকদিন আগে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠে তাঁর কথাবার্তা ও আচরণ নিয়ে দল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূল তাঁকে শো-কজ় নোটিশ পাঠিয়েছে এবং তাঁর জবাবের জন্য অপেক্ষা করছে।
কী ঘটেছিল অশোকনগরের মঞ্চে?
সাম্প্রতিক একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, যেখানে নারায়ণ গোস্বামী আমন্ত্রিত ছিলেন, তিনি মঞ্চে উঠে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তবে, অভিযোগ রয়েছে যে তাঁর বক্তব্য এবং আচরণ ছিল অসংলগ্ন। এর ফলে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। সেই সময় মঞ্চে তোলা একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিয়োটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। দলীয় নেতারা এই আচরণকে ‘অনভিপ্রেত’ বলে উল্লেখ করেছেন। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ‘‘বিধায়ক হিসেবে এমন আচরণ জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। এটি দলের ভাবমূর্তির সঙ্গে খাপ খায় না।’’
তৃণমূলের শো-কজ় এবং পরবর্তী পদক্ষেপ
নারায়ণের আচরণের জন্য শুক্রবার তাঁকে শো-কজ় নোটিশ পাঠানো হয়। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শোভনদেব জানিয়েছেন, জবাবের ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, নারায়ণের শো-কজ়ের জবাব দেওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে, তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব নিজের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। দলের নির্দেশ অনুযায়ী, নারায়ণকে তাঁর আচরণের ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং এর ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দলের অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া এবং শোভনদেবের বক্তব্য
বিধানসভায় এই প্রসঙ্গে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একজন বিধায়কের কাছ থেকে এমন আচরণ কখনোই প্রত্যাশিত নয়। জনসাধারণের মনোভাব আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা নারায়ণের জবাবের জন্য অপেক্ষা করছি। এরপরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ দলের অন্যান্য নেতারাও এই ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন এবং দলীয় ভাবমূর্তির সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ঘটনাটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
নারায়ণ গোস্বামী অশোকনগরের জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তাঁর এমন আচরণ শুধুমাত্র দলের নয়, বরং তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছেও অস্বস্তিকর। একজন বিধায়ক হিসেবে তাঁর কাছ থেকে দায়িত্বপূর্ণ আচরণ প্রত্যাশিত।
তৃণমূল কংগ্রেস, যেটি বরাবরই দলীয় শৃঙ্খলা এবং জনসম্পর্কের প্রতি গুরুত্ব দেয়, এমন ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, দলের ভাবমূর্তির সঙ্গে অসংলগ্ন কোনও আচরণই বরদাস্ত করা হবে না।

