নাগপুর কলকাতাগামী বিমানে বোমাতঙ্ক
সাধারণ যাত্রার পথে নাগপুর থেকে কলকাতায় আসছিল ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইট। তবে আচমকা বিমানের ভেতরে বোমা থাকার আশঙ্কা দেখা দিলে যাত্রাটি তখনই ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে মোড় নেয়। বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত রায়পুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করা হয়। রায়পুরে অবতরণের পরপরই বিমানে উপস্থিত ১৮৭ জন যাত্রী ও ৬ জন কর্মীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয় এবং সুরক্ষাব্যবস্থা আরও কড়া করে বিমানটি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সরিয়ে নিয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়।
বোমাতঙ্কের আতঙ্ক: যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা
বিমান অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই সুরক্ষাকর্মী এবং বম্ব স্কোয়াড দ্রুত তল্লাশি শুরু করেন। এ ধরনের ঘটনায় বিমানের যাত্রীদের মানসিক চাপের পাশাপাশি বিমান কর্মীরাও উদ্বিগ্ন হন। রায়পুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কিরণ রাঠোর জানান, বিস্ফোরক সন্দেহে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, যদিও এখনো কোনো বিপজ্জনক বস্তু পাওয়া যায়নি। এই তল্লাশি পর্ব সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব নয়।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো বোমাতঙ্কের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ অনেক ফ্লাইটেই বোমা রাখার মিথ্যা হুমকি দেখা যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে যাত্রীরা একধরনের আতঙ্কিত থাকলেও নিরাপত্তা কর্মীদের তৎপরতায় তারা অনেকটাই স্বস্তি পাচ্ছেন। রায়পুর বিমানবন্দরেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া করার পাশাপাশি এ ধরনের হুমকির সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে।
সম্প্রতি বোমাতঙ্কের ঘটনা বৃদ্ধি: বিশেষ নিরাপত্তা প্রস্তুতি
গত কয়েক সপ্তাহে ধারাবাহিকভাবে বোমা হুমকির ঘটনা ঘটায় সরকার এই বিষয়ে নতুন করে পদক্ষেপ নিয়েছে। এনআইএ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলি বোমা হুমকির উৎস খুঁজতে সক্রিয় হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে এই হুমকির খবর ছড়ানো হচ্ছে বলে প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে। তাই এ ধরনের পোস্ট ও খবরগুলোর ওপর বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং সম্ভাব্য সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টগুলিকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সমাজমাধ্যমগুলিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, দেশের প্রতিটি বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, যেন যাত্রীরা নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করতে পারেন। প্রতিটি যাত্রী এবং লাগেজ তল্লাশি করে তবেই তাদের বিমানে ওঠার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। দেশের প্রতিটি বিমানবন্দরে বিশেষ দল মোতায়েন করা হয়েছে যারা দ্রুত বোমাতঙ্ক বা এ জাতীয় কোনো হুমকির সময় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
বোমাতঙ্কের মিথ্যা হুমকি ও এর প্রভাব
বোমাতঙ্কের মিথ্যা হুমকি শুধু যাত্রীদের নয়, দেশের নিরাপত্তার দিকেও একটা বড় ধাক্কা তৈরি করছে। যাত্রীরা আতঙ্কিত থাকেন, এবং তাদের পরিকল্পনাতেও প্রভাব পড়ছে। সরকার ও বিমান সংস্থাগুলি প্রতিটি হুমকির বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। তবে এসব ঘটনা যাতে আর না ঘটে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা আরও নিশ্চিত করা যায়, সেজন্য সরকার কয়েকটি কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র মাধ্যমে প্রতিটি বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি বিমানের প্রতিটি কর্মীকেও এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যেন তারা দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
প্রতিটি বিমান সংস্থাকে সরকার নির্দেশ দিয়েছে যেন তারা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো রকমের আপস না করে। বিমানবন্দরে প্রতিটি সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা অবাঞ্ছিত ঘটনা সম্পর্কে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, সামাজিক মাধ্যমেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের হুমকি আরও কমে আসে।
বর্তমানে সরকার এ ধরনের ভুয়া খবর ছড়ানোর উৎস বন্ধ করতে চাইছে, যাতে দেশের মানুষ নির্ভয়ে তাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে বিমান সেবা ব্যবহার করতে পারেন।

