নাকতলায় নিঃশব্দে ‘বাড়ি ফেরা’!
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই নাকতলার বিজয়কেতন থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পরে তাঁর মুক্তি প্রায় নিশ্চিত হলেও, আশ্চর্যজনকভাবে তাঁর নিজের পাড়ায় কোনও উচ্ছ্বাস নেই। সোমবার সন্ধ্যায় খানপুর রোড ঘিরে ছিল নিঝুম নীরবতা।
পাড়ার বহু মানুষই পার্থ প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইছেন না। এক যুবকের স্পষ্ট বক্তব্য—
“কে ছাড়া পাচ্ছেন, জানতে চাই না।”
পার্থের পিতা বিজয় চট্টোপাধ্যায়ের নামে তৈরি বাড়ি ‘বিজয়কেতন’ — এক সময়ে ছিল অনুগামী ও কর্মীদের ভিড়ে সরগরম। আজ তার সামনে বসা দুই-একজন ছাড়া কেউ নেই। পাশেই ঝুলছে মমতা-অভিষেক-পার্থের ছবি— সেই পুরনো জৌলুস এখন ম্লান।
পুলিশকর্মী সুরেন্দ্রনাথ টুডু, যিনি পার্থের মন্ত্রীকাল থেকেই এখানে ডিউটি দেন, বলেন—
“একসময় লোকজনের লাইন লেগে থাকত। এখন সব বদলে গিয়েছে।”
পাড়ার বাসিন্দা অন্তরা মিত্র বলেন—
“এ বাড়ি কত ভিড় দেখেছে! এখন যেন একাকী দাঁড়িয়ে আছে।”
তৃণমূলের সঙ্গে পার্থর সম্পর্ক এখনও ঠান্ডা। দলীয়ভাবে দেখা করতে কেউ আসছেন না। তবে স্থানীয় সূত্রের দাবি, বেহালা পশ্চিমের এক তৃণমূল কাউন্সিলর নাকি পার্থকে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে আনার আয়োজনের চেষ্টা করছেন।
নাকতলা উদয়ন সংঘ, যাদের দুর্গাপুজো একসময় পার্থর হাত ধরেই আলোচনায় উঠেছিল, তারই কর্তা অঞ্জন দাশ বললেন—
“দলীয়ভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে, দেখা করতে যাব কি না।”
এক পাশে কাঁধ ঝুলিয়ে প্রৌঢ় রাজেশ রায়ের দীর্ঘশ্বাস—
“সময়ের চাকা ঘুরে যায়। একসময় পার্থর কাছে সবাই যেতে চাইত। আজ পার্থ ফিরছেন, কিন্তু কেউ আর সময় বের করতে চাইছে না।”
মঙ্গলবার দুপুরে পার্থর বাড়ি ফেরার কথা।
কিন্তু পাড়ার পরিবেশ বলে দিচ্ছে — এই ফেরা উৎসবের নয়, এক নিঃশব্দ অধ্যায়ের পরবর্তী পাতা।

