সাত রাজ্য বেশি কর দিলেও কম ফিরে পাচ্ছে— কী বলছে বিশ্লেষণ?
দেশের আর্থিক ফেডারেল কাঠামো নিয়ে ফের উঠল প্রশ্ন। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের সদ্য প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে— দেশের সাতটি রাজ্য কেন্দ্রকে তুলনায় অনেক বেশি কর দিলেও কম টাকা ফেরত পাচ্ছে, আর কয়েকটি রাজ্য এর ঠিক উল্টো সুবিধা ভোগ করছে। এ নিয়ে চলেছে জোরালো আলোচনা, কারণ ২০২৬ থেকে কার্যকর হতে চলেছে ষোড়শ অর্থ কমিশনের নতুন প্রাপ্যহার।
🔎 কর দেওয়া ও কর ফেরতের অদ্ভুত অমিল
রাজ্যসভায় কেন্দ্র যে পরিসংখ্যান জমা দিয়েছে, তার ভিত্তিতে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে— মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, তামিলনাডু, তেলঙ্গানা ও গুজরাত কেন্দ্রীয় কোষাগারে বিশাল অঙ্কের কর দিলেও বিনিময়ে খুব কম অংশ ফিরিয়ে পাচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ:
- মহারাষ্ট্র
- কেন্দ্রীয় করের মোট সংগ্রহে অবদান: ৩৬.১%
- কেন্দ্রের থেকে ফেরত প্রাপ্য: ৬.৬৫%
→ অর্থাৎ দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবেই পরিচিত এই রাজ্য কেন্দ্রকে বিপুল কর দিলেও নিজস্ব অংশ আদায় করছে খুব কম।
অন্যদিকে এমনও রাজ্য রয়েছে যারা তুলনায় কম কর দিয়ে বেশি অর্থ সুবিধা পাচ্ছে, যেমন—
- উত্তরপ্রদেশ
- মোট সংগৃহীত করের অবদান: ৪.৬%
- কেন্দ্রের ফেরত বরাদ্দ: ১৫.৮%
ঠিক একইভাবে বিহার, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশও আর্থিক দিক থেকে কেন্দ্রীয় বরাদ্দে লাভবান হয়েছে বলে রিপোর্ট বলছে।
📊 কেন হচ্ছে এই অমিল?
কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজা মুন্ডে সংসদে জানিয়েছেন—
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ভিত্তিতেই রাজ্যগুলিকে করের অংশ দেওয়া হয়।
এই হিসেব নির্ভর করে মোট ছ’টি মানদণ্ডের উপর—
- রাজ্যের জনসংখ্যা
- আয়তন
- জনবিন্যাস
- রাজ্যের আর্থিক প্রয়োজন
- আর্থিক স্বনির্ভরতা
- রাজস্ব আহরণের দক্ষতা
তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়— রাজ্য কেন্দ্রীয় কোষাগারে কত কর দেয়, তা পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বণ্টননীতিতে ছিল না।
🆕 ২০২৬–২০৩১: আসছে নতুন কর-বণ্টন ব্যবস্থা
ষোড়শ অর্থ কমিশন ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে তার রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
নতুন নিয়ম কার্যকর হবে ১ এপ্রিল ২০২৬ থেকে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন—
➡️ নতুন বণ্টনব্যবস্থায় রাজ্য কত কর দেয়, তা এবার গুরুত্ব পেতে পারে।
➡️ এর ফলে ভারসাম্যহীনতা কমতে পারে, বা উল্টো আরও তীব্র বিতর্কও তৈরি হতে পারে।
💬 কেন বড় রাজ্যগুলির ক্ষোভ বাড়ছে?
মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, কর্নাটকের মতো শিল্পোন্নত রাজ্যগুলির অভিযোগ—
তারা দেশের অর্থনীতিকে চালায়, কিন্তু তাদের প্রাপ্য অংশ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে কেন্দ্র বলছে—
পুরো দেশকে সমান উন্নয়নের পথে তুলতেই কম সমৃদ্ধ রাজ্যগুলিকে বেশি সাহায্য করতে হয়।

