নতুন বছর আসতে আর বেশি দেরি নেই। শীতকাল মানেই পার্টি, বড়দিনের উৎসব এবং একের পর এক জমজমাট অনুষ্ঠান। এমন সময় অনেকেই চান নিজেকে একটু ফিট এবং আকর্ষণীয় করে তুলতে। বিশেষত, যাঁরা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত, তাঁদের জন্য রয়েছে সহজ কিছু পদ্ধতি, যা মেনে চললে নতুন বছরের আগে কমিয়ে ফেলতে পারবেন ১০-১২ কেজি পর্যন্ত। পুষ্টিবিদদের মতে, সঠিক ডায়েট এবং শরীরচর্চার মাধ্যমে দ্রুত ওজন ঝরানো সম্ভব।
ওজন কমানোর চারটি সহজ পদ্ধতি:
পুষ্টিবিদ হিনা কৌর বেদি সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে সহজ চারটি উপায় জানিয়েছেন, যেগুলো মেনে চললে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। এগুলো হলো:
১) ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ:
প্রতিদিন খাওয়ার ক্যালোরি ৫০০-৭০০-এর বেশি যেন না হয়। এর জন্য খাবারের তালিকা তৈরি করতে হবে এবং কী খাবেন, তার পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
২) প্রোটিনে জোর দিন:
প্রোটিন শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে দ্রুত ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। ডিম, পনির, চর্বিহীন মুরগির মাংস নিয়মিত ডায়েটে রাখুন। প্রোটিন বেশি খেলে পেট ভরা থাকে এবং ক্ষুধা কম অনুভূত হয়।
৩) সবুজ শাকসবজি ও ফল খাওয়ার অভ্যাস:
বিভিন্ন মৌসুমি ফল এবং প্রচুর শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাইরের খাবার এবং অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট পেতে বাদাম ও অ্যাভোকাডো খেতে পারেন।
৪) পরিবর্তনশীল কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ:
সাদা ভাত, পাউরুটি, ময়দা ও আটার পরিবর্তে খেতে পারেন ব্রাউন রাইস, ওটস বা রাগি। এছাড়া জোয়ার-বাজরার রুটি শরীরের জন্য বেশি উপকারী।
দিনের সময় অনুযায়ী ডায়েট প্ল্যান:
- সকাল:
দিন শুরু করুন ডিটক্স পানীয় দিয়ে। মৌরি-মেথি ভেজানো জল, ত্রিফলা চূর্ণের জল, বা লেবুর রস মেশানো উষ্ণ জল পান করুন। এরপর প্রাতরাশে দুধ-কর্নফ্লেক্স, সিদ্ধ ডিম, বা মুগ ডালের চিল্লা খেতে পারেন। - মিড-মর্নিং:
প্রাতরাশের কিছুক্ষণ পর টাটকা ফল, পালং শাক, শসা, চিয়া বীজ দিয়ে তৈরি স্মুদি পান করুন। - দুপুর:
দুপুরে ভাত ও রুটি বাদ দিয়ে গ্রিলড চিকেন বা পনির খান। সঙ্গে স্যালাড ও টক দই যোগ করতে পারেন। নিরামিষাশীরা সবজির স্যুপ বেছে নিতে পারেন। - বিকেল:
বিকেলের দিকে ভাজাভুজি বা বাইরের খাবার এড়িয়ে সিদ্ধ ডিম বা ছাতুর শরবত খান। - রাত:
রাতের খাবার সাড়ে ৮টার মধ্যে সেরে ফেলুন। সিদ্ধ সবজি, স্যুপ, বা পনিরের সঙ্গে হালকা স্যালাড রাখুন।
সতর্কতা ও পরামর্শ:
ওজন কমানোর ডায়েট শুরু করার আগে অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন। কারণ, ভুল ডায়েট শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে এবং হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। তাই নিজের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি মেনে চলুন।
নিয়মিত শরীরচর্চা, সঠিক ডায়েট এবং ধৈর্য—এই তিনটি মন্ত্র মেনে চললেই নতুন বছরে নিজেকে ফিট এবং আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব।