ধোনি ও চেন্নাই!
দু’দশক ধরে ক্রিকেটের দুনিয়ায় মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বা ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নামে পরিচিত এক কিংবদন্তি রয়েছেন। তবে এ বছরের আইপিএলে ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসকে দেখে মনে হচ্ছে যেন এক অচেনা দল, এবং ধোনিকে দেখেও পুরনো সেই রূপ পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি মাঠে নামার আগে থেকেই ধোনির দেওয়া বাহানাগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
ধোনি বলছেন, “ঘরের মাঠে বেশিরভাগ ম্যাচ খেলতে হয়, কিন্তু আমরা সেই সুবিধা পাচ্ছি না।” আরও বলেন, “এ বছর প্রথম একাদশে বার বার পরিবর্তন করা হয়েছে, যা আমাদের দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে।” এর মানে, ধোনি দলের মানসিকতা ও পারফরম্যান্সের মধ্যে ফারাক দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এত বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে মাঠে নামার আগেই এই বাহানাগুলো কি সত্যিই যুক্তিযুক্ত?
এবারের আইপিএলে চেন্নাইয়ের পারফরম্যান্স একেবারেই প্রত্যাশার থেকে অনেক নিচে। পাঁচবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন দলকে এমন দুর্বল অবস্থায় দেখা যায়নি এর আগে। রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের চোটের পর চাপ সামলানোর জন্য ধোনির কাছ থেকে আরও অনেক কিছু আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই চাপের মধ্যেও দলের পারফরম্যান্সের উন্নতি হয়নি। ধোনি নিজেও প্রাক্তন দিনের মতো ঝলক দেখাতে পারছেন না। একটি ভাল স্টাম্পিং বা ছক্কা দিয়ে হয়তো ধোনিভক্তদের উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হতে পারে, তবে ম্যাচের ফল বদলায় না।
এবারের আইপিএলে চেন্নাই যে সুনির্দিষ্ট কৌশল বা ধারাবাহিকতা নিয়ে খেলছে, তা স্পষ্ট নয়। প্রায় এক মাস ধরে চলা টুর্নামেন্টে দলের প্রস্তুতি ছিল আরও দেড় মাস আগেই। পেশাদার ক্রিকেটারদের জন্য এত সময় কি যথেষ্ট নয়? এই প্রশ্নই উঠছে বারবার।
এদিকে, পঞ্জাবের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ের ইনিংসের সময় সাম কারেনের ৮৮ রানের পরেও দলের সংগ্রহ ছিল দুর্বল। আর সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই পঞ্জাব ম্যাচ জিতে নেয়। চেন্নাইয়ের বোলিং, ব্যাটিং বা ফিল্ডিং কোনটাই আশানুরূপ হচ্ছে না। এমনকি রবীন্দ্র জাডেজার মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও দলকে সাহায্য করতে পারছেন না।
মাঠে নামার আগেই ধোনির বাহানাগুলো কেন এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে? চেন্নাইকে এমন দিশাহীন অবস্থায় দেখে ক্রিকেটপ্রেমীদের মন খারাপ। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া ধোনি একসময়ে দলের আশা-আশ্রয় ছিলেন। কিন্তু এখন তাঁর দলের সঙ্গে এক চিরচেনা ধোনির কোনো সম্পর্কই মনে হচ্ছে না। এক সময় যিনি দলের হাল ধরতেন, আজ সেই ধোনি নিজেই যেন হাল ছেড়ে দিয়েছেন।