ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ধ্বংস!
বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি—যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক সময় বাস করতেন—তা ধ্বংস করা হয়েছে। এই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। ভারতের তরফ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এই বাড়িটি শুধু একটি ভবন নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক।
ধানমন্ডিতে ধ্বংসযজ্ঞ: কী ঘটেছিল?
বুধবার রাতে উত্তেজিত জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে জড়ো হয়। শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ। ক্রেন এনে বাড়িটির বেশ কিছু অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে।
এই ঘটনার পরই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটি দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের বীরোচিত প্রতিরোধের ঐতিহ্য বহন করে। এই স্থাপনা ভাঙচুর করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং নিন্দনীয়। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্ব বোঝেন, তারা এই বাড়ির ঐতিহ্য ও মূল্যও বোঝেন।”
হাসিনার ভাষণের পরেই অশান্তি?
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই ঘটনার জন্য সরাসরি দায়ী করেছে শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণকে। প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। বুধবার রাতে ভার্চুয়ালি দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেন হাসিনা, যা আগে থেকেই প্রচার করেছিল আওয়ামী লীগ। হাসিনার ভাষণের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বিক্ষোভকারীরা এবং বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
শুধু বঙ্গবন্ধুর বাড়িই নয়, ভাঙচুর করা হয় হাসিনার ব্যক্তিগত বাসভবন ‘সুধা সদন’ও।
ভারতীয় কূটনীতির প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পরপরই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নয়াদিল্লিতে চিঠি দিয়ে জানায়, “ভারতে বসে যেন শেখ হাসিনা এমন উস্কানিমূলক ভাষণ আর দিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করা হোক।” ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূতকে তলবও করা হয়।
এর পাশাপাশি হাসিনাকে দেশে ফেরত চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলার অভিযোগ এনে তাঁকে বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি করতে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তবে ভারত এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক উত্তর দেয়নি। তার মধ্যেই দিল্লির পক্ষ থেকে মুজিবের বাড়ি ধ্বংসের ঘটনায় নিন্দা জানানো হলো।
এখন কী হতে পারে?
এই ঘটনার জেরে বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন চাপ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। হাসিনার প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গে ভারত কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা ভবিষ্যতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
বঙ্গবন্ধুর বাড়ির ধ্বংস, শেখ হাসিনার অবস্থান, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে এখন পুরো অঞ্চলজুড়ে তীব্র কৌতূহল।
শিবলিঙ্গে দুগ্ধস্নান, মহাকুম্ভে কি এবার পুণ্যের পথে ভিকি কৌশল?