দ্বিতীয় দুবাই বানানোর স্বপ্ন ভাঙল!
একসময় পাকিস্তান বালুচিস্তানের গ্বদরকে দ্বিতীয় দুবাই বানানোর উচ্চাশা পোষণ করেছিল। আরব সাগরের তীরে অবস্থিত এই সমুদ্রবন্দরকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু বাস্তবে এই প্রকল্প উন্নয়নের প্রতীক নয়, বরং পাকিস্তানের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিনিয়োগের অভাব, জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা এবং বালুচিস্তানের ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতা আন্দোলনের ফলে গ্বদর এখন পাকিস্তানের অভিশাপ হয়ে উঠেছে। এই ব্যর্থতার পেছনে কী কী কারণ রয়েছে?
গ্বদরের ব্যর্থতার কারণ কী?
✅ অর্থনৈতিক সঙ্কট
গ্বদরকে ঘিরে পাকিস্তান যে বিশাল বিনিয়োগের আশা করেছিল, তা কখনওই বাস্তবায়িত হয়নি। বরং এই প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের বোঝা দিন দিন বাড়ছে।
✅ প্রাকৃতিক দুর্যোগ
গ্বদরের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত বিপজ্জনক। বৃষ্টিপাত ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রায়ই এলাকা প্লাবিত হয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ৩০ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে শহর একপ্রকার ডুবে গিয়েছিল, রাস্তা ও সেতু ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
✅ বালুচিস্তানের বিদ্রোহ
বালুচ জনগণের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, গ্বদরের উন্নয়ন তাদের জন্য কিছুই আনেনি। পাকিস্তান সরকার এবং চীনের বিনিয়োগের ফলে স্থানীয় জনগণ তাদের কর্মসংস্থান হারাচ্ছে, এবং এর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। বালুচ লিবারেশন আর্মি (BLA) প্রায়ই গ্বদরে হামলা চালাচ্ছে।
✅ চীনের আধিপত্য
গ্বদর বন্দর নির্মাণে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ ছিল, এবং পাকিস্তান প্রায়ই তাদের শর্ত মানতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাকিস্তান কার্যত গ্বদরকে চীনের হাতে তুলে দিয়েছে।
গ্বদর: আশীর্বাদ না অভিশাপ?
পাকিস্তান চেয়েছিল গ্বদরকে মধ্য এশিয়ার বাণিজ্যকেন্দ্র বানিয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। কিন্তু বাস্তবে এটি ইসলামাবাদের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
❌ যে স্বপ্ন দেখেছিল পাকিস্তান:
- গ্বদরকে ‘দ্বিতীয় দুবাই’ বানানো
- আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা
- চীনের বিনিয়োগ থেকে লাভবান হওয়া
✅ বাস্তবতা:
- চীনের কাছে ঋণের বোঝা আরও বেড়েছে
- বালুচ বিদ্রোহীরা প্রতিনিয়ত হামলা চালাচ্ছে
- প্রাকৃতিক দুর্যোগে শহর বারবার বিধ্বস্ত হচ্ছে
- পাকিস্তানের অর্থনীতি আরও গভীর সঙ্কটে পড়েছে
বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্বদর এখন পাকিস্তানের জন্য এক দুঃস্বপ্ন। উন্নয়নের প্রতীক হওয়ার বদলে এটি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তার দিক থেকে পাকিস্তানকে আরও দুর্বল করে দিচ্ছে।
একদিনেই ২০ লাখ অনুগামী হারালেন! বিতর্কের কেন্দ্রে ইউটিউবার রণবীর ইলাহাবাদিয়া, কত আয় করেন তিনি?