Saturday, March 22, 2025

দোলের রঙে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার: সম্মতি ছাড়া স্পর্শ কতটা গ্রহণযোগ্য?

Share

দোলের রঙে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার!

দোল উৎসব রঙের খেলা, আনন্দ-উৎসব, মিলনের দিন। কিন্তু এই উৎসবের ছলেই কি কখনো অযাচিত স্পর্শের শিকার হন অনেকে? প্রতি বছর এই প্রশ্ন উঠে আসে, বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে। রঙের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার সময় অনেকেই ভুলে যান, সম্মতি ছাড়া কাউকে স্পর্শ করা এক ধরনের নিপীড়ন। এ নিয়ে কথা বলেছেন টলিউডের জনপ্রিয় তিন অভিনেত্রী—তানিকা বসু, রূপাঞ্জনা মিত্র এবং উষসী চক্রবর্তী

সম্মতি ছাড়া স্পর্শ কতটা গ্রহণযোগ্য?

বুরা না মানো হোলি হ্যায়’—এই কথাটির আড়ালে বহু নারী সম্মতিহীন স্পর্শের শিকার হন। রং খেলার আনন্দের মাঝে লুকিয়ে থাকে অস্বস্তির গল্প। সম্প্রতি নেট দুনিয়ায় আলোড়ন তুলেছেন নেটপ্রভাবী রেহা অদানি। তিনি জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দোল উৎসবের নামে নারীদের হয়রানি করা হয়। পুরুষরা ইচ্ছাকৃতভাবে নারীদের দিকে রং ছোড়ে, বিশেষত তাদের গোপনাঙ্গ লক্ষ করে। নন্দগাঁও ও বরসানা এলাকায় কৃষ্ণ-রাধার দোল উৎসবের ছদ্মাবরণে নারীদের প্রতি নানা অনভিপ্রেত আচরণ করা হয়।

রেহা পরামর্শ দিয়েছেন, যদি কেউ এইসব জায়গায় দোল খেলতে চান, তাহলে পুরুষের ছদ্মবেশে যেতে পারেন কিংবা পুরোপুরি ঢেকে রাখা পোশাক পরতে পারেন। কিন্তু এটাই কি সমাধান? নারীদের কেনই বা নিজেদের রক্ষা করতে এত কৌশল অবলম্বন করতে হবে?

টলিউড তারকাদের দোল উদযাপন ও মতামত

দোল উৎসবে নারীদের সম্মতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অভিনেত্রী তানিকা বসু স্পষ্ট জানান, “কাউকে রং মাখানোর আগে তার অনুমতি নেওয়া উচিত। শুধু তাই নয়, সেই ব্যক্তি আদৌ রং খেলতে চান কি না, সেটাও জিজ্ঞাসা করা দরকার।”

তিনি আরও বলেন, “শুধু রং খেলা নয়, অনেকেই জোর করে মাদক খাইয়ে দেন এই দিনে। এটাও এক ধরনের নির্যাতন। আমি ‘বুরা না মানো হোলি হ্যায়’ ধারণাটিকেই পছন্দ করি না। এর মাধ্যমেই জোর করে কাউকে স্পর্শ করার অনুমতি নিয়ে নেওয়া হয়।”

তানিকা জানান, তিনি কখনোই দোল খেলেননি, কারণ ছোটবেলায় তার বাবা অনুমতি দিতেন না। পরে বুঝেছেন, বাবা হয়তো নিরাপত্তার কারণেই নিষেধ করেছিলেন।

অন্যদিকে, অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী এবছর শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসবে যোগ দিতে যাচ্ছেন। তবে বড় পরিসরে দোল খেলার পরিকল্পনা নেই। তিনি বলেন, “আমি বরাবরই ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে নিরাপদ পরিবেশে দোল খেলি। তাই তেমন কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা হয়নি। তবে অনেক নারীই দোলের নামে হয়রানির শিকার হন, যা একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।”

‘বুরা না মানো হোলি হ্যায়’ মানেই কি সম্মতির উলঙ্ঘন?

অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র মনে করেন, “অনেকেরই রং নিয়ে ভয় বা অস্বস্তি থাকতে পারে। ছোটবেলায় রাস্তায় বেরোলেই দোলের দিনে বেলুন ছোড়া হতো, যা একেবারেই সম্মতিহীন আচরণ। আমরা ধীরে ধীরে সেই সময় পার করে এসেছি, তবে এখনও সচেতন হতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমি দোল উৎসব সাধারণত খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গেই উদযাপন করি। কিছু পার্টিতে গিয়েছি, সেখানে পরিবেশ খুব একটা স্বস্তিকর ছিল না। তবে ব্যক্তিগতভাবে কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা হয়নি, কারণ আমি সচেতনভাবেই এড়িয়ে চলি।”

সমাধান কোথায়?

রং খেলার আনন্দ তখনই প্রকৃত হয়, যখন তা উভয় পক্ষের সম্মতিতে হয়। কারও অস্বস্তি বা ভয় জন্ম দেয় এমন কিছু করা উৎসবের আনন্দ নষ্ট করে। নারীদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন সচেতনতা, সম্মানের চর্চা, এবং ‘বুরা না মানো হোলি হ্যায়’ সংস্কৃতির পরিবর্তন।

তানিকার কথায়, “আমরা দোল খেলবো, আনন্দ করবো, কিন্তু সেটা হতে হবে সম্মানের সঙ্গে, জোরজবরদস্তির সঙ্গে নয়।

২০২৭ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করলেন রোহিত, ফিটনেসে নজর দিচ্ছেন অভিষেক নায়ারের সাহায্যে

Read more

Local News