ইউনিক এপিক নম্বর!
দেশের ভোটার তালিকায় অনিয়ম নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কের মধ্যেই বড় ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। এবার থেকে প্রত্যেক ভোটারের জন্য থাকবে একটি ইউনিক (একক) এপিক নম্বর। ফলে, একই নম্বরে একাধিক ভোটারের নাম থাকার সম্ভাবনা আর থাকবে না। আগামী তিন মাসের মধ্যেই এই নতুন ব্যবস্থা চালু করার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
কেন প্রয়োজন ইউনিক এপিক নম্বর?
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ‘ডুপ্লিকেট’ বা ভূতুড়ে ভোটার থাকার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ ছিল, একই নম্বরে একাধিক ব্যক্তির নাম নথিভুক্ত হয়েছে, যা ভোটের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম এই ইস্যু সামনে আনেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভিনরাজ্যের ভোটারদের নাম পশ্চিমবঙ্গের তালিকায় ঢোকানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন,
“নির্বাচন কমিশনের আশীর্বাদ নিয়ে দিল্লি, মহারাষ্ট্রের মতো বাংলাতেও কোনো ফিল্ড সার্ভে না করেই ভূতুড়ে ভোটারদের নাম তোলা হচ্ছে। বাংলার ভোটারের এপিক কার্ডে হরিয়ানা, গুজরাতের লোকের নাম তোলা হচ্ছে!”
কমিশনের কড়া পদক্ষেপ
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবার কড়া পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন। কমিশন জানিয়েছে, ডুপ্লিকেট এপিক নম্বরের সমস্যা দূর করতে প্রতিটি ভোটারকে ইউনিক নম্বর প্রদান করা হবে। অর্থাৎ, এবার থেকে একজন ভোটারের জন্য থাকবে শুধুমাত্র একটি এপিক নম্বর, যা অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে মিলবে না।
কমিশন আরও জানিয়েছে, এপিক নম্বর এক হলেও এটি ভুয়ো ভোটারদের অস্তিত্ব প্রমাণ করে না। কারণ, ভোটকেন্দ্র ও বিধানসভা কেন্দ্র আলাদা হতে পারে। তবে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এবার পুরোপুরি নতুন ব্যবস্থায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া: ‘মমতারই জয়’
এই ঘোষণার পর তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর লাগাতার চাপের কারণেই কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
একজন তৃণমূল নেতা বলেন,
“এটা স্পষ্ট যে, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশ্রয়ে ভূতুড়ে ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি হচ্ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম এই অনিয়ম ধরিয়ে দিয়েছিলেন। আজ নির্বাচন কমিশনও সেই কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে।”
নতুন ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করবে?
কমিশন জানিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যেই এই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু হবে।
- প্রতিটি ভোটারকে নতুন ইউনিক নম্বর দেওয়া হবে।
- আগের নম্বরের সঙ্গে যদি অন্য কোনো নাম মেলে, তাহলে তা বাতিল করা হবে।
- নতুন ভোটার তালিকা সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে যাচাই করা হবে।
শেষ কথা
ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ আশা করছেন, এই নতুন ব্যবস্থার ফলে আগামী নির্বাচনে অনিয়মের সুযোগ অনেকটাই কমবে। এখন দেখার, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কতটা সফল হয় কমিশন!
ভারতের উপর পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছেন ট্রাম্প! ঘোষণা করলেন নির্দিষ্ট তারিখও

