দুর্যোগে স্তব্ধ দিল্লি!
বুধবার সন্ধ্যায় আচমকাই রুদ্ররূপে হাজির হল প্রকৃতি। প্রবল গরমের পরে কিছুটা স্বস্তি দিলেও, তাণ্ডবলীলা চালিয়ে বিপর্যয় নামিয়ে আনল দিল্লির উপর। হঠাৎ করে শুরু হওয়া প্রবল ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে প্রাণ হারালেন দু’জন, আহত অন্তত ১১ জন। থমকে গেল রাজধানীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় ঝড়-বৃষ্টি। তার সঙ্গে সঙ্গেই শিলাবৃষ্টির দাপট। লোধি রোডে ঝড়ে উপড়ে পড়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটি, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্ব দিল্লির গোকুলপুরী এলাকায় মাথার উপর গাছ ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয় ২২ বছরের এক যুবকের।
এখানেই শেষ নয়। ঝড়ে ছিঁড়ে পড়ে বিদ্যুতের তার, ভেঙে যায় ওভারব্রিজের লোহার অংশ, বহুতল থেকে খসে পড়ে কাঁচের জানালা— সব মিলিয়ে শহর জুড়ে চোটের খবরে উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা। আহতদের মধ্যে কেউ মেট্রো স্টেশনে, কেউ রাস্তায় চলাচলের সময় চোট পান।
বিপর্যয়ের আঁচ পড়ে বিমান পরিষেবাতেও। রাজধানীর ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তত ১৩টি বিমান অবতরণ করতে না পেরে অন্যত্র ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১২টি বিমান পাঠানো হয় রাজস্থানের জয়পুরে, একটি আন্তর্জাতিক বিমান মুম্বইয়ে অবতরণ করে।
ঘণ্টা খানেকের মধ্যে হওয়া এই মুষলধারে বৃষ্টিতে দিল্লির বিভিন্ন রাস্তায় জল জমে যায়। তৈরি হয় ভয়াবহ যানজট। কর্মব্যস্ত মানুষেরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লি পুলিশ রাস্তায় নামিয়ে দেয় বিশেষ দল, এবং নাগরিকদের হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বেরোনোর পরামর্শ দেয়।
দুর্যোগ শুরু হতেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয় বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাতে আরও দুর্ঘটনা না ঘটে, সেই আশঙ্কায় একাধিক এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ পরিষেবা।
ঝড়ের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দিল্লি মেট্রোর ওভারহেড তারও। এর ফলে কয়েকটি লাইনে সাময়িকভাবে থমকে যায় মেট্রো পরিষেবা। যাত্রীরা আটকে পড়েন মাঝপথে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, এই দুর্যোগের কারণ ছিল উত্তর দিল্লি থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত উলম্ব মেঘের আস্তরণ। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে সফদরজংয়ে ১২.২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। সঙ্গে ছিল ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটার গতিবেগের ঝড়।
প্রকৃতি যেমন স্বস্তি দেয়, তেমনই তার রুদ্ররূপে মুহূর্তে স্তব্ধ করে দিতে পারে গোটা মহানগরী— দিল্লির বুধবার সন্ধ্যা তারই প্রমাণ। এখন দেখার, রাজধানী কত দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারে।
কান চলচ্চিত্র উৎসবে ঘোমটা ঢাকা জাহ্নবী! লাল গালিচায় মা শ্রীদেবীর ছায়া যেন ফিরল মেয়ে রূপে

