দু’দিনের আমেরিকা সফরে মোদী!
দু’দিনের সফরে আমেরিকা পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবারই তিনি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এর আগে তিন জন রাষ্ট্রপ্রধান তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মোদী হচ্ছেন চতুর্থ বিশ্বনেতা, যিনি ট্রাম্পের মুখোমুখি হতে চলেছেন।
বিশ্ব রাজনীতিতে মোদী-ট্রাম্প বৈঠকের গুরুত্ব
মোদীর আগে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এবং জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লা। এই বৈঠকগুলোর পরই মোদীর সাক্ষাৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির দিক থেকে।
মোদীর আমেরিকা আগমন: স্বাগত জানাল ভারতীয়রা
ওয়াশিংটনে পৌঁছে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন মোদী। তিনি লেখেন,
“কিছুক্ষণ আগে ওয়াশিংটনে পৌঁছালাম। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য এবং ভারত-আমেরিকা কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।”
এই সফরের সময় তিনি ওয়াশিংটনের ব্লেয়ার হাউসে থাকবেন। এটি একটি ঐতিহাসিক সরকারি অতিথিশালা, যেখানে আগেও বহু বিশ্বনেতা থেকেছেন। অনাবাসী ভারতীয়দের একাংশ সেখানে জড়ো হয়ে মোদীকে স্বাগত জানান। তাঁদের সঙ্গে দেখা করে হাত নাড়ান মোদী।
প্রথম দিনই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক
ওয়াশিংটনে নামার পরপরই আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর তুলসী গাবার্ডের সঙ্গে দেখা করেন মোদী। এটি স্পষ্ট যে, সফরের শুরু থেকেই কৌশলগত এবং নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
ট্রাম্প-মোদী সম্পর্ক: অতীত থেকে বর্তমান
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক বেশ উষ্ণ ছিল।
- ২০১৯ সালে টেক্সাসে ‘হাউডি মোদী’ ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে ট্রাম্প উপস্থিত ছিলেন।
- ২০২০ সালে গুজরাতে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানে মোদী ট্রাম্পকে স্বাগত জানান।
কিন্তু এবার পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে।
- আমেরিকার অভিবাসন নীতি নিয়ে বিতর্ক,
- বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে ভারত-মার্কিন মতবিরোধ,
- এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব
এই সব বিষয়ই মোদী-ট্রাম্প বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হতে পারে।
বৈঠকের সম্ভাব্য বিষয়
বিশ্লেষকদের মতে, মোদী ও ট্রাম্পের আলোচনায় যেসব বিষয় গুরুত্ব পাবে, সেগুলি হলো:
✅ ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি: দুই দেশের বাণিজ্য নীতি নিয়ে সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিরসন।
✅ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা: ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি।
✅ চীনের প্রভাব মোকাবিলা: ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে ভারত আরও সক্রিয়ভাবে আমেরিকার পাশে দাঁড়াক।
✅ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ভারতের অবস্থান: আমেরিকা চাইছে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করুক।
✅ এইচ-১বি ভিসা এবং অভিবাসন নীতি: ভারতীয় প্রযুক্তি কর্মীদের আমেরিকায় কাজের সুযোগ বৃদ্ধি।
নজর থাকবে বৈঠকের ফলাফলের দিকে
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কোন পথে এগোবে, তার অনেকটাই নির্ভর করছে এই বৈঠকের উপর। রাজনৈতিক মহল, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের নজর এখন ট্রাম্প-মোদীর আলোচনার দিকেই।
“রাজ্যের বাজেট দিশাহীন!”— এক সুরে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু, নওশাদ ও বাম-কংগ্রেস