দিল্লি বিস্ফোরণের মূল সন্দেহভাজন উমর!
দিল্লির লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণে ব্যবহৃত সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি যিনি চালাচ্ছিলেন, সেই উমর উন-নবি ওরফে উমর মহম্মদ এখন তদন্তকারীদের আতশকাচে। ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়ার পর এই চিকিৎসকের সঙ্গে বিস্ফোরণকাণ্ডের যোগ স্পষ্ট হয়ে গেছে। তার পরেই আরও কড়া পদক্ষেপ নিল নিরাপত্তা বাহিনী— কাশ্মীরের পুলওয়ামায় তাঁর বাড়ি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিল।
মধ্যরাতে পুলওয়ামায় আইইডি বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে গেল উমরের বাড়ি
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলওয়ামার এক প্রত্যন্ত এলাকায় উমরের বাড়িতে নিরাপত্তা বাহিনী আইইডি বিস্ফোরণ ঘটায়। একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাড়িটি।
এর সঙ্গে সঙ্গে এলাকাজুড়ে শুরু হয় তল্লাশি। রাতভর অভিযান চালিয়ে পুলিশ ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে তিন জন উমরের পরিবারের সদস্য।
পুলিশের দাবি, দিল্লি বিস্ফোরণের তদন্তে ধরা পড়া দুই কাশ্মীরি চিকিৎসকের সঙ্গে উমরের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। তিনিই মূল পরিকল্পনাকারী ও গাড়ি চালক বলেই মনে করছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি।
আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসূত্র, বাড়ছে সন্দেহ
উমর পেশায় ছিলেন চিকিৎসক, এবং ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বিস্ফোরণকাণ্ডে ধৃত একাধিক সন্দেহভাজন— বিশেষ করে মুজ়াম্মিল আহমেদ ও শাহিন সইদ—এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত। বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম এখন তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে।
এর আগেই আল-ফালাহ্ ক্যাম্পাস থেকে সন্দেহভাজনদের দুই গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছিল। তাদের হোস্টেলে বসেই বিস্ফোরণের ছক কষা হয়েছিল বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের।
লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণের ১৩ জন মৃত—নতুন তথ্যের খোঁজে তদন্তকারীরা
সোমবার দুপুরে দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের পরই হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি উড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই বহু দেহাংশ পাওয়া যায়। নিহতের সংখ্যা এখন ১৩।
প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ—
- উমর এবং মুজ়াম্মিল ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বারবার লালকেল্লার সামনে যায়
- ধারণা, প্রজাতন্ত্র দিবসে হামলার রেকি করা হয়েছিল
- বিস্ফোরণের দিন ভোরে গাড়িটি ফরিদাবাদ থেকে দিল্লির উদ্দেশে বের হয়
- সিসিটিভি ফুটেজে একাধিকবার দেখা গেছে উমরকে
দিল্লি পুলিশের এক কর্তা পিটিআইকে বলেন,
“উমরের মায়ের ডিএনএ নমুনা মিলিয়ে দেখা হয়েছে। বিস্ফোরণস্থল থেকে পাওয়া দেহাংশের সঙ্গে তার মিল পাওয়া গেছে।”
এতে নিশ্চিত হয়— গাড়ির চালক উমরই।
বাড়ির বিস্ফোরণ কেন? নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাখ্যা
নিরাপত্তা বাহিনীর মতে—
- বাড়িটি জঙ্গি কার্যকলাপের কেন্দ্র ছিল
- বিস্ফোরক মজুত থাকার সম্ভাবনা প্রবল
- তদন্ত লুকোতে ও প্রমাণ নষ্ট করতে বাড়িটি ব্যবহার করা সম্ভব ছিল
- তাই আইনি অনুমতি নিয়েই বাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়
উমরের পরিবারও নজরে
উমরের মা, দুই ভাই এবং একাধিক আত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের অনুমান— উমরের পরিবার তাঁর গতিবিধি, জঙ্গি মডিউলের কাজ, আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে জানত।
তদন্তে নতুন প্রশ্ন
এই ঘটনায় সামনে আসছে বেশ কিছু প্রশ্ন—
- উমরের পেছনে কোন জঙ্গি সংগঠন?
- আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয় কি বৃহত্তর জঙ্গি নেটওয়ার্কের অংশ?
- দিল্লি ছাড়াও দেশে অন্য কোথাও হামলার ছক ছিল কি?
- উমরদের বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিল কে?
তদন্তকারীরা বলছেন, দিল্লি বিস্ফোরণ একটি বড় জঙ্গি চক্রের মাত্র প্রথম ধাক্কা, আরও নেটওয়ার্ক সামনে আসবে।
শেষ কথায়
উমর উন-নবির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর পুলওয়ামায় তাঁর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া প্রমাণ করে— নিরাপত্তা বাহিনী এবার জঙ্গিবিরোধী অভিযানে আরও আক্রমণাত্মক।
দিল্লি বিস্ফোরণের নেপথ্যে থাকা পুরো নেটওয়ার্ক ভাঙতেই এই কঠোরতা।
তদন্তের পরবর্তী ধাপ— আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয় ও কাশ্মীরি চিকিৎসা চক্রের গভীর সংযোগ— এখন গোয়েন্দাদের প্রধান লক্ষ্য।

