দিল্লিতে মরসুমের দূষিততম দিন!
দিল্লির আকাশ ঢেকেছে ঘন ধোঁয়াশায়। পারদপতনের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী শহরের বায়ুদূষণ চরমে পৌঁছেছে। সোমবার সকাল ৯টায় দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) পৌঁছায় ৪৮৫-এ, যা এই মরসুমের সবচেয়ে খারাপ। রবিবার সন্ধ্যায় একিউআই ছিল ৪৫৫। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আট দফা কড়া বিধিনিষেধ জারি করা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
দিল্লিতে বায়ুদূষণে জর্জরিত
বিগত এক সপ্তাহ ধরে দিল্লির বাসিন্দারা ভয়াবহ বায়ুদূষণের শিকার। দিনের বেলায়ও ধোঁয়াশার কারণে কমে এসেছে দৃশ্যমানতা। এর ফলে বিমান এবং ট্রেন চলাচলে বিলম্ব ঘটছে। বিমান সংস্থাগুলি যাত্রীদের অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে যাত্রার পরামর্শ দিচ্ছে।
দূষণ রোধে আট দফা বিধিনিষেধ
দিল্লি সরকার দূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ (গ্র্যাপ-৩) চালু করেছে। এর আওতায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে:
- নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বহনকারী ট্রাক বাদে অন্যান্য ভারী যানবাহনের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
- শুধুমাত্র আধুনিক ইঞ্জিনবিশিষ্ট ছোট গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
- নির্মাণকাজ আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ।
- দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণি ছাড়া স্কুলের সব পঠনপাঠন অনলাইনে চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দূষণের প্রভাব
ধোঁয়াশার কারণে দিল্লির মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় ধরে ধোঁয়াশা থাকার কারণে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকি ট্রেন এবং বিমানের পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।
মুম্বাইতেও ধোঁয়াশা
এদিকে, সোমবার সকালে ধোঁয়াশার দেখা মেলে আরব সাগরের তীরবর্তী মুম্বাইয়েও। সেখানে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ছিল ১৭৯। মুম্বাইবাসীদের জন্য এটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা।
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন একাধিক পদক্ষেপ নিলেও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের অভাবে দূষণের লাগাম টানা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লির আবহাওয়াগত অবস্থার সঙ্গে মিলিত ধূলিকণা, যানবাহনের দূষণ এবং শিল্পকারখানার ধোঁয়া এই সমস্যা আরও জটিল করে তুলছে।
পরিশেষে
দিল্লি ও দেশের অন্যান্য শহরে বায়ুদূষণ বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা ও সম্মিলিত উদ্যোগই একমাত্র সমাধানের পথ দেখাতে পারে।