দিঘার ‘জগন্নাথধাম’ নাম ঘিরে বিতর্ক! !
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রতটবর্তী শহর দিঘায় উদ্বোধন হয়েছে একটি নতুন জগন্নাথ মন্দিরের। সেই মন্দিরের নাম ‘জগন্নাথধাম’ রাখা হয়েছে, যা ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। ওড়িশার পুরীর ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ মন্দিরের কর্তৃপক্ষ এই নাম এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক ধর্মীয় শব্দের উপর একচ্ছত্র স্বত্ব দাবি করে আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সোমবার পুরীর ‘শ্রীজগন্নাথ মন্দির প্রশাসন’-এর বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ‘জগন্নাথধাম’, ‘মহাপ্রসাদ’, ‘শ্রীমন্দির’, ‘শ্রীক্ষেত্র’ এবং ‘পুরুষোত্তমধাম’— এই ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলির উপর স্বত্ব চেয়ে আবেদন করা হবে। শুধু নাম নয়, মন্দিরের লোগো বা প্রতীকী চিহ্নের উপরেও স্বত্ব পেতে চাইছেন তাঁরা। প্রশাসনের মুখ্য কর্তা অরবিন্দ পাধির কথায়, “এই পদক্ষেপের একমাত্র উদ্দেশ্য হল জগন্নাথদেবের পবিত্রতা ও ঐতিহ্য রক্ষা করা এবং ওই সব শব্দের অবাধ ও বাণিজ্যিক ব্যবহার রুখে দেওয়া।”
মূল বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে দিঘার নতুন মন্দিরে ‘ধাম’ শব্দের ব্যবহার। এই শব্দটি সাধারণত হিন্দু ধর্মের চতুর্দশ ধর্মপীঠ বা ‘চার ধাম’-এর সঙ্গে যুক্ত, যার মধ্যে পুরী অন্যতম। তাই পুরীর অনুগামীরা মনে করছেন, ‘জগন্নাথধাম’ নাম ব্যবহার শুধুমাত্র বিভ্রান্তিকর নয়, বরং পুরীর ধর্মীয় মর্যাদার উপর আঘাত। ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানানো হবে দিঘার মন্দিরের নাম থেকে ‘জগন্নাথধাম’ শব্দটি সরাতে।
এই বিতর্ক নতুন নয়। দিঘার মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এক পর্যায়ে পুরীর এক সেবায়েত দাবি করেছিলেন, নবকলেবরের সময় পুরীতে যে নিমকাঠ উদ্বৃত্ত ছিল, সেই কাঠ দিয়েই নাকি দিঘার মূর্তি তৈরি হয়েছে! পরে অবশ্য ওড়িশা সরকার এই দাবি অস্বীকার করে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এমন কিছু ঘটেনি। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রতিক্রিয়া দেন: “আমার নামে বদনাম করলেন কেন? তাহলে কতো টাকা ফাইন হওয়া উচিত?”
বস্তুত, ধর্মীয় ভাবাবেগ ও আঞ্চলিক পরিচিতি জড়ানো এমন ইস্যুতে আইন ও প্রশাসন— দুই পক্ষই এখন সরব। একদিকে ওড়িশার ঐতিহ্য রক্ষার প্রয়াস, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় ও পর্যটন উন্নয়নের উদ্যোগ— এই দ্বন্দ্ব এখন কেন্দ্রীয় স্তরে পৌঁছনোর মুখে।
এশিয়ান কাপে খেলাই এখন লক্ষ্য, সতীর্থদের বার্তা দিলেন মরিয়া সুনীল ছেত্রী

