থমকে শীতের আমেজ!
ডিসেম্বরের শুরুতে যখন শীতের আমেজে মাতোয়ারা ছিল শহর ও জেলা, তখন এক ধাক্কায় পারদ নেমে এসেছিল ১৩.৮ ডিগ্রির নিচে। শীতলতম দিনের স্বাদে শহরবাসী তখন খুশির আমেজে। কিন্তু মধ্য ডিসেম্বরে হঠাৎই আবহাওয়ার রূপ বদলাতে শুরু করেছে। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে শীতের মিঠে আমেজ কিছুটা থমকে গেছে।
বাড়ছে পারদ, বাধা উত্তুরে হাওয়ায়
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের মতে, বর্তমানে মধ্য দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও তার আশেপাশের এলাকায় একটি নিম্নচাপ অবস্থান করছে। এই নিম্নচাপ পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আরও শক্তিশালী হবে এবং তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে এগোবে। নিম্নচাপের প্রভাবে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উত্তুরে হাওয়ার গতিপথে বাধা সৃষ্টি করছে। এর ফলেই কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় শীতের অনুভূতিতে ছেদ পড়েছে।
আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে ১৬ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে ২৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দুই থেকে তিন দিনে দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা আরও ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে।
বৃষ্টি এবং তুষারপাতের পূর্বাভাস
আজ থেকেই দক্ষিণবঙ্গে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। শুক্রবার থেকে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ার পরিস্থিতিও বেশ আকর্ষণীয়। দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পাহাড়ি এলাকায় হালকা তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পর্যটকদের জন্য দারুণ সুযোগ থাকছে এই শীতের মৌসুমে।
শুকনো আবহাওয়ার অপেক্ষা
বৃষ্টির পরবর্তী সময় দক্ষিণবঙ্গে আবারও শুষ্ক আবহাওয়া ফিরবে বলে মনে করছেন আবহবিদরা। মেঘ কেটে গেলে হালকা কুয়াশা দেখা দিতে পারে, আর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হবে। শুকনো আবহাওয়ার সঙ্গে আবারও ফিরবে উত্তুরে হাওয়া, যা রাজ্যবাসীকে শীতের আমেজে ফিরিয়ে দেবে।
উত্তরবঙ্গে শীতের দৃশ্যপট
উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় ইতিমধ্যেই শীতের প্রকোপ বেড়েছে। সেখানকার পারদ আরও নিচে নামার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত দার্জিলিং এবং সংলগ্ন অঞ্চলে তুষারপাতের সম্ভাবনা পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। তবে বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে কিছুটা অসুবিধা হতে পারে বলে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
শীতের প্রত্যাশা
যদিও মধ্য ডিসেম্বরে এই আবহাওয়ার পরিবর্তন শীতপ্রেমীদের জন্য কিছুটা হতাশাজনক, তবে নিম্নচাপ কেটে গেলে পরিস্থিতি আবারও স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিসেম্বরের শেষভাগে এবং জানুয়ারির শুরুতে রাজ্য জুড়ে শীতের প্রকোপ বাড়তে পারে।
সুতরাং, আপাতত রাজ্যের মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে প্রকৃত শীতের অনুভূতির জন্য। যদিও নিম্নচাপের কারণে সাময়িক বৃষ্টি এবং মেঘলা আকাশ দেখা যাবে, তবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে শীত আবারও ফিরবে বলে আশা।