তেলঙ্গানার সুড়ঙ্গে আটকে শ্রমিকেরা!
তেলঙ্গানার শ্রীশৈলম সুড়ঙ্গে ধস নামার পর আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে— শ্রমিকরা সুড়ঙ্গের ঠিক কোন অংশে আটকে রয়েছেন, তা নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। কোমরসমান জল ও কাদা তাঁদের অবস্থান শনাক্ত করাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
কী ঘটেছিল?
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ শ্রীশৈলম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নির্মীয়মাণ ৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে হঠাৎ ধস নামে। সুড়ঙ্গের ভিতরে তখন ৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। ৪২ জন কোনোভাবে বেরিয়ে আসতে পারলেও আটজন এখনও আটকে রয়েছেন।
প্রথম ধসের পর কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও একটি ধস নামে ১৫০ মিটারের মধ্যে, যা উদ্ধারকাজকে আরও জটিল করে তুলেছে। এখন তাঁদের অবস্থান চিহ্নিত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উদ্ধারকাজে কী কী বাধা আসছে?
1️⃣ সঠিক অবস্থান নির্ধারণ করা কঠিন:
উদ্ধারকারীদের পক্ষে এখনও নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হয়নি, আটকে পড়া শ্রমিকরা সুড়ঙ্গের ঠিক কোন জায়গায় রয়েছেন। ১৩ কিলোমিটারের বেশি ভিতরে তাঁরা আটকে আছেন, তবে বিশদভাবে চিহ্নিত না করতে পারলে দ্রুত উদ্ধার করা কঠিন।
2️⃣ সুড়ঙ্গের ভিতরে জল ও কাদা জমে আছে:
দুর্ঘটনার পর সুড়ঙ্গের ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে, যার ফলে ভিতরে কোমরসমান জল ও কাদার স্তূপ তৈরি হয়েছে। যতক্ষণ না এই জল ও কাদা অপসারণ করা যায়, ততক্ষণ উদ্ধারকার্যের অগ্রগতি সম্ভব নয়।
3️⃣ বিশাল ধ্বংসস্তূপ:
উদ্ধারকারীরা ইতিমধ্যে ১১ কিলোমিটার ভিতরে প্রবেশ করেছেন, কিন্তু আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছতে আরও ২০০ মিটার যেতে হবে। তবে সেই অংশে বিশাল ধ্বংসস্তূপ জমে রয়েছে, যা সরানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
4️⃣ সুড়ঙ্গের উপরে খনন সম্ভব নয়:
উদ্ধারকাজের আরও একটি সীমাবদ্ধতা হল, সুড়ঙ্গের উপরের অংশ পাথরের স্তরে আবৃত, যা সরাসরি খুঁড়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনো অসম্ভব করে তুলেছে। ফলে একমাত্র পথ সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়েই এগিয়ে যাওয়া।
কীভাবে উদ্ধারকাজ চলছে?
✔️ জল সরাতে শক্তিশালী পাম্প:
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, প্রথমে সুড়ঙ্গের জমা জল সরানো হবে। এজন্য ১০০ এবং ৭০ হর্সপাওয়ারের দুটি শক্তিশালী পাম্প নিয়ে আসা হয়েছে।
✔️ ড্রোন ব্যবহার করার পরিকল্পনা:
শ্রমিকদের অবস্থান চিহ্নিত করতে ড্রোন পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করার পর ড্রোনের মাধ্যমে ভিতরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে।
✔️ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) অভিযান:
NDRF-এর ডেপুটি কমান্ডার সুখেন্দু দত্ত জানিয়েছেন, শ্রমিকদের কাছে পৌঁছতে এখন মাত্র ২০০ মিটার বাকি রয়েছে। তবে ধ্বংসস্তূপ সরাতে বেশ কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে।
শেষ পর্যন্ত কতটা সম্ভব?
উদ্ধারকাজের গতি নির্ভর করছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর উপর। প্রশাসনের আশা, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জল এবং কাদা সরিয়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে সুড়ঙ্গের অবস্থা বিবেচনায় সময় আরও লাগতে পারে। পরিবারের সদস্যরাও উৎকণ্ঠার মধ্যে অপেক্ষা করছেন তাঁদের প্রিয়জনদের সুস্থভাবে ফিরে পাওয়ার জন্য।
রবিবার মহারণ: ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথে কোন লড়াইয়ে নজর থাকবে সবচেয়ে বেশি?