ঠাণের সেই হাসপাতালেই জন্মদিন পালন কাম্বলির
পেশাদার ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরেও বিনোদ কাম্বলি ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের মনে জায়গা করে রয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি এক অন্য কারণে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন তিনি। গত মাসে ঠাণের একটি হাসপাতালে শয্যাশায়ী হয়ে বেশ কিছু সময় কাটিয়েছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার কাম্বলি। সেদিন তিনি জানিয়ে ছিলেন, চিকিৎসকদের জন্যই তাঁর জীবন ফিরে পেয়েছেন। তার পর থেকেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন কাম্বলি।
এবার, ২০ জানুয়ারি, শনিবার, নিজের ৫৩তম জন্মদিন পালন করতে আবারও ঠাণের সেই হাসপাতালেই ফিরে যান কাম্বলি। তবে এবারের জন্মদিন উদ্যাপন ছিল একেবারে ভিন্ন রকম। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা থেকে শুরু করে আজ হাসপাতালেই চিকিৎসক, নার্স ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দের সঙ্গে জন্মদিন পালন, কাম্বলি তার জীবনের এই বিশেষ দিনটি এমনভাবে উদ্যাপন করেছেন যা তাঁর জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা।
এই বিশেষ দিনটি হাসপাতালেই উদ্যাপন করার পরিমাণে আবেগপ্রবণ ছিলেন কাম্বলি। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরও তিনি সেখানে ফিরে গিয়েছিলেন। তাঁর জন্মদিন উদ্যাপনের একটি ভিডিও বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালেই একটি বিশাল কেক আনা হয়েছে এবং কাম্বলি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কেক কাটছেন। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আছেন হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সরা।
বিরাট কেকটি কাটার পর কাম্বলি একে একে সবার হাতে কেক তুলে দেন। সকলকে খাওয়ানোর পর তিনি বিশেষভাবে চিকিৎসক ও নার্সদের ধন্যবাদ জানান। তাঁর চোখে তখন আবেগের জল। তিনি স্পষ্টই জানিয়ে দেন, এই নতুন জীবন তাকে দেওয়া তাদের অবদানের জন্য তিনি চিরকাল কৃতজ্ঞ।
বিনোদ কাম্বলি হাসপাতালের সেই সময়টিতে এক অনন্য দৃশ্যেরও জন্ম দিয়েছিলেন। গত মাসে যখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তখন তার মূত্রনালিতে সংক্রমণ হয়েছিল এবং পরে জানা যায়, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা প্রথম দিকে যথেষ্ট গুরুতর ছিল। কিন্তু চিকিৎসকদের আন্তরিকতা, তাদের পরিশ্রম এবং কাম্বলি নিজেই যে অটুট মনোবল দেখিয়েছিলেন, তার ফলে দিন কয়েকের মধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়েই কাম্বলি ‘চক দে ইন্ডিয়া’ ছবির গানটির তালে নাচতে শুরু করেছিলেন। তার নাচের ভিডিওও তখন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। হাসপাতালের নার্স এবং অন্য কর্মীরা তার সঙ্গে নাচে যোগ দিয়েছিলেন। এমনকি, ওই হাসপাতালের অন্যান্য রোগীরাও কাম্বলির এই আনন্দ উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। কাম্বলি, তার সমর্থকদের উদ্দেশে ভিডিওতে বলেন, “আপনাদের ভালবাসার কারণেই আমি এতটা সুস্থ হয়ে উঠেছি।” তিনি আরও ধন্যবাদ জানান হাসপাতালের ডিরেক্টর শৈলেশ ঠাকুরকে।
আজ, কাম্বলি যখন হাসপাতালের ওই চিকিৎসক এবং নার্সদের সঙ্গে নিজের জন্মদিন উদ্যাপন করতে ফিরলেন, তখন সবাইকে ধন্যবাদ জানানো তাঁর কাছে মানে ছিল এক বিশেষ প্রতীকী উপলক্ষ্য। তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, জীবনের কঠিন সময়েও যখন পাশে থাকে সঠিক মানুষ, তখন সব কিছুই সম্ভব হয়ে ওঠে।
এভাবে কাম্বলি যেন তাঁর জীবনের দ্বিতীয় সুযোগ পেয়েছেন, এবং সেই নতুন জীবনকে তিনি পরিবারের সদস্যদের, হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান।