Sunday, May 11, 2025

ট্রাম্পের শুল্কে কাঁপছে চিন, ভারতের দরজায় ‘ছাড়ের জিনিস’ নিয়ে হানা ড্রাগনের

Share

ট্রাম্পের শুল্কে কাঁপছে চিন!

ট্রাম্পের কঠিন শুল্ক নীতির জেরে চাপে পড়েছে চিন। বৈদ্যুতিন সামগ্রীর অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশটি এখন রীতিমতো দিশেহারা। মার্কিন বাজারে প্রবেশে বাধা তৈরি হওয়ায় নতুন খরিদ্দারের খোঁজে এবার তারা চোখ রেখেছে ভারতের দিকে। বিপুল ছাড়ে বৈদ্যুতিন পণ্য দিতে প্রস্তুত বেজিং, যাতে বন্ধ না হয় তাদের ফ্যাক্টরিগুলোর উৎপাদন।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি চিনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন। এর ফলে মার্কিন বাজারে চিনা পণ্য কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। একের পর এক মার্কিন কোম্পানি চিনের সঙ্গে বরাত বাতিল করছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প নীতিতে পরিবর্তন না এলে চিনের বৈদ্যুতিন শিল্প ধসে পড়ার আশঙ্কা প্রবল।

এই অবস্থায় চিনের সংস্থাগুলি ভারতের দিকে ফিরে তাকিয়েছে। কারণ, ভারতের বৈদ্যুতিন বাজার এখন প্রবল গতিতে বাড়ছে। দেশে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিন সামগ্রীর ৭৫ শতাংশ উপকরণই চিন থেকে আসে। ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির ফলে টিভি, মোবাইল, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভের মতো গ্যাজেটের চাহিদা আকাশছোঁয়া।

এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চিনা কোম্পানিগুলি এখন ভারতের সংস্থাগুলিকে ছাড়ের প্রলোভন দেখাচ্ছে—পাঁচ শতাংশ ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপুল পরিমাণ বরাত আদায়ের চেষ্টা চলছে। এমনকি ছাড় দিয়েও তাদের চার থেকে সাত শতাংশ মুনাফা হবে বলে তারা দাবি করছে।

চিনা সংস্থাগুলির এই আচরণকে অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন। কারণ, শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থ নয়, কূটনৈতিক লাভও পেতে চায় বেজিং। তারা ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনাও করছে। এমনকি ‘হাতি আর ড্রাগনের নাচ’ দেখার আহ্বানও জানানো হয়েছে বেজিং থেকে।

কিন্তু দিল্লি এখন অনেক বেশি সতর্ক। সীমান্ত সমস্যা, গালওয়ান সংঘর্ষ, বারংবার আগ্রাসী মনোভাব—এসবের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই চলছে চিনের প্রস্তাব পর্যালোচনা। তাছাড়া চিনা কোম্পানিগুলির মাধ্যমে ভারত ঘুরপথে আবার মার্কিন বাজারে ঢোকার সুযোগ করে দিতে চায় না মোদী সরকার।

চলমান পরিস্থিতিতে ভারত আপাতত নিজের উৎপাদনে জোর দিচ্ছে। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান—এই দেশগুলোর সঙ্গে বিকল্প বাণিজ্য পথ খুঁজছে নয়াদিল্লি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চিনা ছাড়ের ফাঁদে পা দিলে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বরং আত্মনির্ভরতার পথেই হেঁটে দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করাই হবে বিচক্ষণতা।

এই মুহূর্তে ভারতের সামনে বড় প্রশ্ন—সস্তার পণ্যের লোভে ভেসে যাবে, না কি কৌশলী থেকে ভবিষ্যৎ গড়বে? সময়ই দেবে উত্তর।

চিন বাদে সব দেশের উপর শুল্কনীতি স্থগিত, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বিশ্ববাজারে ফিরল স্বস্তি

Read more

Local News