Monday, December 1, 2025

ট্রাম্পের ‘বাঙ্কার বাস্টার’ আঘাত কি সফল? ইরান হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, রাশিয়ার বার্তা— ‘পরমাণু অস্ত্রেই জবাব’

Share

ট্রাম্পের ‘বাঙ্কার বাস্টার’ আঘাত কি সফল?

রবিবার ভোরে আন্তর্জাতিক রাজনীতির মঞ্চে যেন আগুন জ্বলল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে আমেরিকা ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ও ‘টোমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্র— ফোরডো, নাতান্‌জ় এবং ইসফাহান-এ হামলা চালাল। উদ্দেশ্য ছিল এগুলিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা। ট্রাম্প দাবি করলেও, পরমাণুকেন্দ্রগুলো ধ্বংস হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

এই ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমাগুলি ছোড়া হয়েছে বি-২ স্পিরিট বোমারু বিমানে। ফোরডোতে ফেলা হয়েছে ছ’টি এমওপি বোমা, যেগুলোর লক্ষ্য মাটির ৩০০ ফুট গভীরে থাকা তেজস্ক্রিয় প্রক্রিয়া চালানোর কক্ষ। তবে উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণ বলছে, ফোরডো কেন্দ্র ধ্বংস হয়নি, শুধু প্রবেশপথ ও বাইরের পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত।

এর মধ্যেই ইরানের পররাষ্ট্র দফতর ও রেভলিউশনারি গার্ড জানিয়েছে, তারা দমে যাবে না। প্রতিশোধ হবেই। তাদের বক্তব্য, “আমেরিকার পালানোর পথ নেই। তারা অনুতাপ করবে।”

রাশিয়া কড়া সুরে বলেছে, ইরান চাইলে তাদের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখতে পারে, এমনকি প্রয়োজন হলে বন্ধু দেশগুলি পরমাণু অস্ত্রও জোগাবে। চিনও বলেছে, আমেরিকা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম ভেঙেছে। পাকিস্তান নিন্দা করে বলেছে, “এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফোনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের সঙ্গে কথা বলে পশ্চিম এশিয়ার উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানান।

এরই মধ্যে আবার উঠে এসেছে ট্রাম্পের পুরনো পোস্ট— যেখানে তিনি ওবামাকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, আলোচনার ক্ষমতা না থাকলে ইরানে হামলা করবে। কিন্তু এবার নিজেই আলোচনার সুযোগ না দিয়েই হামলা চালিয়ে চাপে পড়েছেন তিনি। ইরানের হামলার আগাম প্রস্তুতি ছিল বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা, কারণ হামলার ঠিক আগেই পরমাণুকেন্দ্রগুলিতে ট্রাক, বুলডোজ়ার দেখা গিয়েছে উপগ্রহচিত্রে।

এদিকে পাল্টা হামলায় ইজ়রায়েলও লক্ষ্য করেছে ইরানের সামরিক ঘাঁটি, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি যেন বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে।

এখন প্রশ্ন উঠছে— ইরান কি প্রতিরোধ গড়ে তুলবে? হরমুজ প্রণালী বন্ধ, মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সক্রিয়তা বা পরমাণু কর্মসূচি জোরদার— এই চারটি পথে ইরান প্রতিশোধ নিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “এই সংঘাত বিশ্বজুড়ে অশান্তি ডেকে আনতে পারে। উত্তেজনা প্রশমনই একমাত্র পথ।”

“আলোচনা না পেরে যুদ্ধ!” — আমেরিকার ইরান আক্রমণে ফের ভাইরাল ট্রাম্পের পুরনো ওবামা-আক্রমণ

Read more

Local News