ট্রাম্পের নতুন শুল্ক চিঠি!
বাংলাদেশ-সহ ১৪টি দেশের উপর আমদানি শুল্ক সংক্রান্ত একাধিক পরিবর্তনের কথা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) রাতভর একযোগে এই দেশগুলির রাষ্ট্রনেতাদের কাছে পাঠানো হয়েছে ‘শুল্ক চিঠি’। ভারত এই তালিকায় না থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশকে নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে ব্রিক্স সদস্য দক্ষিণ আফ্রিকার উপর আবারও শুল্ক জারি করলেন তিনি, যদিও তা পূর্ব ঘোষণার তুলনায় অপরিবর্তিতই রয়েছে।
বাংলাদেশের জন্য আংশিক স্বস্তি
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় রফতানিকৃত পণ্যের উপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এবার তা কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও এই ২ শতাংশের ছাড় খুব বড় নয়, তথাপি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। নতুন শুল্কহার কার্যকর হবে আগামী ১ অগস্ট থেকে।
শুল্ক কমল আরও কয়েকটি দেশে
বাংলাদেশ ছাড়াও মায়ানমার, লাওস, তিউনিশিয়া, সার্বিয়া, বসনিয়া, কাজাখস্তান এবং কম্বোডিয়ার উপর চাপানো শুল্ক কিছুটা হ্রাস করা হয়েছে। লাওসের ক্ষেত্রে ৪৮% থেকে কমিয়ে ৪০%, মায়ানমারের ৪৪% থেকে কমে ৪০%, তিউনিশিয়ার ২৮% থেকে ২৫%, সার্বিয়ার ৩৭% থেকে ৩২%, বসনিয়ার ৩৫% থেকে ৩০%, কাজাখস্তানের ২৭% থেকে ২৫% এবং কম্বোডিয়ার ৪৯% থেকে ৩৬% করা হয়েছে।
কোপ পড়ল জাপান ও মালয়েশিয়ায়
জাপান ও মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে শুল্ক বরং বেড়েছে। দুই দেশের উপরই পূর্বঘোষিত ২৪% শুল্কের জায়গায় এখন থেকে ২৫% শুল্ক কার্যকর হবে। ১ অগস্ট থেকে নতুন শুল্কহার অনুযায়ী আমদানি করতে হবে এই দুই দেশের পণ্য।
কারা রইল অপরিবর্তিত তালিকায়?
দক্ষিণ কোরিয়া, তাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ার উপর শুল্কের কোনও পরিবর্তন হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার উপর ২৫%, তাইল্যান্ডের উপর ৩৬% এবং ইন্দোনেশিয়ার উপর ৩২% শুল্ক বলবৎ থাকছে।
ব্রিক্সকে হুঁশিয়ারি ও দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থান
সম্প্রতি ট্রাম্প ব্রিক্স জোটের বিরুদ্ধে সরব হন। তাঁর অভিযোগ, এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী আমেরিকার বিরোধিতা করছে। তাই যে কোনও দেশ এই জোটকে সমর্থন করলে, তার উপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। সেই সূত্রেই দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধানকেও শুল্ক চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে পূর্বঘোষিত ৩০ শতাংশ শুল্কই বহাল রাখা হয়েছে। বাড়ানো হয়নি অতিরিক্ত কোনও হার।
ভারতের ক্ষেত্রে এখনও অনিশ্চয়তা
এত সব ঘোষণা ও কূটনৈতিক পত্র বিনিময়ের মাঝেও ভারতকে নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত বার্তা আসেনি ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে। যদিও দিল্লি-ওয়াশিংটন বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার অগ্রগতি অনেকটাই এগিয়েছে, তা এখন ঠিক কোন পর্যায়ে দাঁড়িয়ে— সেটা অস্পষ্ট।
উপসংহার
ট্রাম্পের এই রাতারাতি পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় ফের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। যেসব দেশ রফতানি নির্ভর অর্থনীতির উপর নির্ভরশীল, তাদের জন্য এই হেরফের স্বস্তি ও শঙ্কা— দুই-ই বয়ে এনেছে। ভারতের দিকেই এখন তাকিয়ে বিশ্ব, আগামী সপ্তাহেই হয়তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
বিকৃত ছবি ও ‘দাদা সংস্কৃতি’ নিয়ে সরব তৃণমূল-কন্যা রাজন্যা হালদার

