Thursday, May 8, 2025

ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যালে যোগ দিলেন মোদী! নতুন ডিজিটাল কূটনীতির ইঙ্গিত?

Share

ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যালে যোগ দিলেন মোদী!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। এবার সেই সুসম্পর্কের প্রতিফলন দেখা গেল ডিজিটাল মাধ্যমে। সোমবার মোদী আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন ট্রাম্পের নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’। এর আগের দিনই মার্কিন পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানকে দেওয়া মোদীর দীর্ঘ সাক্ষাৎকার ট্রাম্প তাঁর প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করেছিলেন।

সাক্ষাৎকার থেকে ট্রুথ সোশ্যালে পদার্পণ

রবিবার রাতে লেক্স ফ্রিডম্যানের পডকাস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদী খোলাখুলি কথা বলেন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। গোধরা পরবর্তী গুজরাট হিংসা থেকে শুরু করে আরএসএসের প্রচারক হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা—সব কিছু নিয়েই তিনি তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের বিষয়ে মোদী বলেন, “ট্রাম্প আমেরিকার স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেন, আর আমি ভারতের স্বার্থকে।” এই কথার মাধ্যমে দুই দেশের নেতৃত্বের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

এরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যালে মোদীর এই সাক্ষাৎকার শেয়ার করেন। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মোদী নিজেই এই প্ল্যাটফর্মে যোগ দেন এবং প্রথম পোস্টে লেখেন,
“ট্রুথ সোশ্যালে থাকতে পেরে আমি আনন্দিত! এখানকার সব উৎসাহী কণ্ঠস্বরের সঙ্গে আলাপচারিতা এবং ভবিষ্যতে অর্থপূর্ণ আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।”

ট্রাম্প-মোদীর সম্পর্ক: কূটনীতি নাকি ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব?

ট্রাম্প ও মোদীর সম্পর্ক শুধুমাত্র দুই দেশের কূটনৈতিক সংযোগেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা ব্যক্তিগত সম্পর্কেরও প্রতিফলন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠানে দুই নেতাকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। সেখানে ৫০,০০০-এর বেশি ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানের সামনে মোদী “অব কি বার, ট্রাম্প সরকার” স্লোগান দিয়েছিলেন, যা বিশ্ব রাজনীতিতে একপ্রকার ব্যতিক্রমী ঘটনা ছিল।

২০২০ সালে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন প্রচারের সময়েও এই সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। তাঁর ‘ফোর মোর ইয়ারস’ ক্যাম্পেইনে মোদী-ট্রাম্পের যৌথ জনসভার ভিডিও ক্লিপিংস ব্যবহার করা হয়েছিল। এর আগেই ট্রাম্প ভারত সফরে এসে মোতেরার মোদী স্টেডিয়ামে বিশাল সমাবেশে অংশ নেন, যেখানে লক্ষাধিক মানুষ তাঁদের স্বাগত জানিয়েছিল। মোদী সেদিন দাবি করেছিলেন, “আমরা একসঙ্গে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাব।”

ডিজিটাল কূটনীতির নতুন অধ্যায়?

মোদীর ট্রুথ সোশ্যালে যোগ দেওয়া কি নিছক বন্ধুত্বের প্রতিফলন, নাকি এর পেছনে রয়েছে বড় কূটনৈতিক বার্তা?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ‘ডিজিটাল কূটনীতি’ বা ‘Digital Diplomacy’-এরই একটি ধাপ। ট্রুথ সোশ্যালে মোদীর উপস্থিতি মানে ভারত-আমেরিকার মধ্যকার সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। এছাড়া, এটি আগামী দিনের নির্বাচনী প্রচার কৌশলের অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

তবে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তাঁর নীতি কতটা ভারত-মৈত্রীপূর্ণ হবে, তা নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে। ইতিমধ্যেই তিনি ভারতসহ একাধিক দেশের বিরুদ্ধে কঠোর শুল্ক নীতি প্রয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে, ভবিষ্যতে দুই নেতার সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।

শেষ কথা: মোদীর ট্রুথ সোশ্যালে যোগ দেওয়া শুধুমাত্র একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সদস্যপদ নেওয়ার বিষয় নয়। এটি ভারত-আমেরিকার ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সম্পর্কের দিকনির্দেশক হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই ডিজিটাল মঞ্চে মোদী-ট্রাম্প জুটি নতুন কোন আলোচনার সূত্রপাত করেন।

সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানের উদ্বেগ, ইউনূস প্রশাসনের কড়া প্রতিক্রিয়া

Read more

Local News