Friday, March 21, 2025

ট্যাবের টাকা লোপাটের চক্রে অন্তত চার রাজ্যের যোগ! ধৃত ১১ জনকে জেরার পর আরও বড় ষড়যন্ত্রের হদিস

Share

ট্যাবের টাকা লোপাটের চক্রে

পশ্চিমবঙ্গের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার বরাদ্দ টাকা চুরির ঘটনায় অন্তত চারটি রাজ্য জড়িত থাকতে পারে বলে অনুমান করেছে পুলিশ। সাইবার অপরাধী চক্রের মাধ্যমে এই টাকা আত্মসাৎ হয়েছে এবং কলকাতা সহ রাজ্যের অন্তত ১৫টি জেলা এতে জড়িত। তদন্তে উঠে এসেছে যে, দেশের অন্য রাজ্যগুলিতেও এই চক্র কাজ করেছে এবং সরকারি প্রকল্পের টাকা চুরি করেছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় এককালীন ১০ হাজার টাকা দেয়। এই টাকা সরাসরি পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে। তবে অভিযোগ উঠেছে যে, অনেক পড়ুয়া এই টাকা পাননি এবং কিছুক্ষেত্রে এক জনের জন্য বরাদ্দ টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং তাঁদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করেছে।

পুলিশের তদন্তে জানা গিয়েছে যে, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের টাকা সাইবার প্রতারণার মাধ্যমে চুরি করা হয়েছে। এই তিন রাজ্য সহ আরও কিছু রাজ্যে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার সম্ভাবনা রয়েছে, যার জন্য ‘জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন মনিটরিং টিম’ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন, ট্যাব কেলেঙ্কারি তদন্তের জন্য বিশেষ একটি দল গঠন করা হয়েছে। এই দলে সিআইডি, সাইবার, ডিআইজি সাইবার এবং অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং দ্রুত তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা এবং মালদহ পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে এবং তাঁরা এই চক্রের আড়াল থেকে আরও তথ্য বের করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ১১ জন ধৃতের জেরা এবং তাঁদের থেকে পাওয়া নথির ভিত্তিতে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, এই চক্রটি আন্তঃরাজ্য অপরাধী চক্রের অংশ। তারা সাইবার প্রতারণার মাধ্যমে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, দেশের আরও কয়েকটি রাজ্যে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন যে, এই চক্রের নেতাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে, তবে তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ১৬ লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব কেনার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে এবং এক হাজার ৯১১ জন পড়ুয়া এখনও সেই টাকা পাননি। তবে তদন্তকারী দল নিশ্চিত করেছে যে, এই পড়ুয়াদের টাকা শীঘ্রই ফেরত পাওয়া যাবে।

এই চক্রের ব্যাপকতা এবং এর সঙ্গে জড়িত রাজ্যের সংখ্যা বাড়তে থাকার কারণে তদন্তে আরও বড় ষড়যন্ত্রের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে।

Read more

Local News