Monday, December 1, 2025

টেস্টে ফেরার সব জল্পনায় ইতি টানলেন কোহলি: জানালেন, এখন শুধুই একদিনের ক্রিকেটেই মনোনিবেশ! মানসিক প্রস্তুতিই তাঁর আসল অস্ত্র

Share

টেস্টে ফেরার সব জল্পনায় ইতি টানলেন কোহলি

রাঁচীর এক দিনের ম্যাচে দুরন্ত শতরান করে ভারতকে দারুণ জয়ের স্বাদ দিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ম্যাচ শেষে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এল আরেকটি বিষয়—টেস্টে তাঁর ফিরতি সম্ভাবনা। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে জল্পনা, অবসর ভেঙে বিরাটকে কি আবার টেস্ট দলে দেখা যাবে? দেশের কোচ গৌতম গম্ভীর থেকে নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর—সবাই ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেললে দরজা খোলা থাকতে পারে। কিন্তু কোহলি এ দিন সেই সব জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন। জানিয়ে দিলেন, এখন থেকে তাঁর পথ একটাই—ওডিআই

ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিতে এসে সঞ্চালক হর্ষ ভোগলে যখন প্রশ্ন করলেন, “এ ভাবেই কি তোমাকে মাঠে দেখা যাবে? শুধু এক ফরম্যাটে?” তখন কোহলির উত্তর ছিল দৃঢ়, “হ্যাঁ, আগামী দিনেও এ ভাবেই আমাকে দেখতে পাবেন। আমি এখন ক্রিকেটের একটাই ফরম্যাট খেলছি—ওডিআই। টেস্টে ফেরার কোনও পরিকল্পনা নেই।”

কোহলি আরও জানান, ক্রিকেট জীবনের এই পর্যায়ে এসে তাঁর কাছে শারীরিক পরিশ্রমের চেয়ে মানসিক প্রস্তুতিটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর ভাষায়,
“আমি কখনওই মাঠে অতিরিক্ত অনুশীলনের পক্ষে নই। আমার প্রস্তুতি মানসিক। যত দিন শরীর সুস্থ এবং মন তীক্ষ্ণ থাকবে, তত দিন খেলব।”

তিনি বলেন, এখন তাঁর বয়স ৩৭। তাই বিশ্রাম দরকার। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টই তাঁকে লম্বা সময় ধরে পারফরম্যান্স ধরে রাখতে সাহায্য করে। ম্যাচের আগের দিনও তিনি বিশ্রাম নিয়েছিলেন, যাতে ম্যাচের দিন সেরা পারফরম্যান্স দিতে পারেন।

কোহলি বোঝান, অভিজ্ঞতা তাঁকে মানসিক ভাবে খেলার জন্য প্রস্তুত করে রাখে। “আমি ৩০০-র বেশি ওয়ানডে খেলেছি। আপনি নিয়মিত খেলাটার সঙ্গে যুক্ত থাকলে এবং অনুশীলনে নিজের ছন্দ খুঁজে নিতে পারলে আলাদা প্রস্তুতির দরকার পড়ে না।”

তিনি খারাপ ফর্ম নিয়েও বলেন, “ব্যাড ফর্মে আরও বেশি সময় নেটে কাটানো উচিত। কিন্তু মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকা এবং খেলাটি উপভোগ করাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

রাঁচীর ম্যাচে তাঁর ইনিংসেও সেই আনন্দ এবং আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট। প্রথম ২০-২৫ ওভার দুর্দান্ত ছন্দে খেলে ম্যাচের ভিত গড়ে দেন তিনি। পরে পিচ ধীরে হয়ে গেলেও পরিস্থিতি বুঝে নিজের খেলা চালিয়ে যান। কোহলির মতে, “শুরুটা ভাল হলে পরের কাজটা সহজ হয়ে যায়। তখনই অভিজ্ঞতা কাজে আসে।”

এই মন্তব্যে স্পষ্ট—টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত তিনি ভেবেচিন্তেই নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, গম্ভীরদের ‘ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার’ পরামর্শকেও তিনি নরম সুরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর মতে, ওডিআই-এর জন্য অতিরিক্ত ম্যাচ প্র্যাকটিসের প্রয়োজন নেই। মাথায় স্পষ্ট পরিকল্পনা আর মানসিক দৃঢ়তা থাকলে তিনি উপভোগ করেন নিজের খেলা এবং পারফরম্যান্সও আসে স্বাভাবিক ভাবে।

এ বার প্রশ্ন উঠছে—২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত কি ওডিআই’ই হবে কোহলির শেষ লড়াই? সময়ই তা বলবে। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, টেস্ট দলে ফেরার আশায় কেউ যেন বসে না থাকে।

Read more

Local News