Saturday, February 8, 2025

ঝাড়খণ্ড বিধানসভা ভোট: জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাসে কে জিতবে?

Share

ঝাড়খণ্ড বিধানসভা ভোট

ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচন এবার একটি বড় রাজনৈতিক দোলাচলে পরিণত হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর, বুধবার প্রথম দফার ভোটগ্রহণের আগে, রাজ্যের ভবিষ্যত নিয়ে চলেছে নানা আলোচনা। ৮১টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে প্রথম দফায় ৪৩টি কেন্দ্রে ভোট হবে। সোমবার, প্রথম দফার প্রচারের শেষ দিন, প্রকাশিত একটি জনমত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে যে, রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল ঘটতে পারে।

সমীক্ষার পূর্বাভাস অনুযায়ী, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ (ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স) আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ৪৫ থেকে ৫০টি আসনে জিততে পারে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ৪২টির চেয়ে অনেক বেশি। অপরদিকে, রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম), কংগ্রেস, আরজেডি ও বামদলের জোট ‘ইন্ডিয়া’ ১৮ থেকে ২৫টি আসন পর্যন্ত জিততে পারে বলে সমীক্ষায় জানানো হয়েছে। এই ফলাফল যদি সত্যি হয়, তবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সহজেই ক্ষমতায় চলে আসবে।

ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনে দুটি প্রধান রাজনৈতিক জোটের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। প্রথমত, ‘ইন্ডিয়া’ জোট, যার মধ্যে রয়েছে হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন জেএমএম, কংগ্রেস, আরজেডি এবং সিপিআইএমএল (লিবারেশন) দলের বাম সমর্থন। গত নির্বাচনে এই জোট প্রায় সাড়ে ৩৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল এবং ক্ষমতায় ছিল। এবারও তারা একত্রে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তবে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ।

এবার বিজেপি গত নির্বাচনের মতো একা লড়ছে না। প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাতোর নেতৃত্বাধীন ‘অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ (আজসু)-এর সঙ্গে বিজেপির জোট গড়া হয়েছে। এছাড়াও, বিহারের নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ এবং চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি (রামবিলাস) দলও এনডিএ-এর অংশীদার হয়েছে। বিজেপি ৬৮টি আসনে, আজসু ১০টি আসনে, জেডিইউ দু’টি এবং এলজেপি একটি আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

অন্যদিকে, ২০ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডের বাকি ৩৮টি আসনে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ হবে। ওই দিনই বুথফেরত সমীক্ষা প্রকাশিত হবে, যা নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা দিতে পারে। ২৩ নভেম্বর হবে ভোটগণনা এবং ফলাফল প্রকাশ।

এবারের নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ এবং বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের মধ্যে সবচেয়ে বড় লড়াইটি হতে চলেছে। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শক্তি ও ঐক্য সামনে থাকলেও বিজেপি এই নির্বাচনে অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, বিশেষ করে তাদের নতুন জোটের অংশীদারদের সমর্থন পেয়ে। তবে, ভোটের দিনকার প্রতিফলনে সব কিছুই স্পষ্ট হবে, এবং সেদিন যে কোন জোট অধিক আসনে জয়লাভ করবে, তা নিয়ে আগামী কিছু দিন ধরে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা নিশ্চিত হতে পারবেন।

ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচন শুধু রাজ্য রাজনীতির জন্যই নয়, ভারতের জাতীয় রাজনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এতে একদিকে যেমন রাজ্যের ভবিষ্যত নির্ধারণ হবে, তেমনি অন্যদিকে বিরোধী দলগুলো যদি জিততে সক্ষম হয়, তা কেন্দ্রীয় সরকারের জন্যও একটি বড় বার্তা হয়ে উঠতে পারে।

Read more

Local News