Monday, December 1, 2025

জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত গ্যালারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন কি না? বিমানের জবাবে ধোঁয়াশা

Share

জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত গ্যালারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন কি না?

আগামী শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর প্রয়াণ দিবস। সেই দিনে, নিউ টাউনে নির্মীয়মাণ জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম ভবনের উদ্বোধন হবে। এই ভবনটি ভবিষ্যতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জীবনের বিভিন্ন দিক এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নিয়ে একটি গ্যালারি হিসেবে তৈরি হবে। তবে, সেই গ্যালারিতে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থান থাকবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তর এখনও ধোঁয়াশায় রয়ে গেছে।

এই প্রশ্নটি সিপিএমের প্রবীণ নেতা এবং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে করা হলে, তিনি স্পষ্ট কোনও উত্তর দেননি। বরং তার জবাব আরও অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেছিলেন, “যে সব বিষয়গুলো প্রাসঙ্গিক থাকবে, সেগুলো অবশ্যই থাকবে। অপ্রাসঙ্গিক বিষয় তো থাকতে পারে না। আর, সমাজ ও সভ্যতার প্রগতির ধারা চলতে থাকবে।”

বিমানের এই জবাবের পরে, রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে— কিভাবে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জ্যোতি বসুর সম্পর্কের প্রতি সিপিএমের অবস্থান হবে? বিশেষত, একসময় যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেতা ছিলেন, তখন তাঁর সম্পর্ক ছিল জ্যোতি বসুর সঙ্গে। অনেক সময় সল্টলেকে বসুর বাসভবনে গিয়েছিলেন মমতা। এই প্রেক্ষিতে বিমান বসুর এমন অস্বচ্ছ জবাব রাজনৈতিক আলোচনায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

তৃণমূল কংগ্রেস এই বিষয়টিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। শাসকদলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সিপিএমকে কটাক্ষ করে বলেন, “যদি জ্যোতি বসুকে নিয়ে গবেষণা করতে চান, তবে সেটা শুধু তাঁর জন্ম-মৃত্যুর তারিখ দিয়েই শেষ হয়ে যাবে না। বরং, সেই গবেষণায় ‘বেঙ্গল ল্যাম্প কেলেঙ্কারি’, ‘যতীন চক্রবর্তীর প্রসঙ্গ’, ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ইস্তফা’, ‘তৃণমূলের জন্ম’ এবং ‘মমতার উত্থান’— এসব কিছু থাকতে হবে। এসবই তো জ্যোতি বসুর রাজনীতি ও জীবনের অঙ্গ ছিল।”

এদিকে, জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই গবেষণাকেন্দ্র চার ধাপে তৈরি হবে। প্রথম ধাপে তৈরি ভবনটি ছ’তলা হবে, যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল গত বছর ১৭ জানুয়ারি, অধুনাপ্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরির হাত দিয়ে। এই গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধন শুক্রবার সিপিএমের পলিটব্যুরোর সমন্বয়ক প্রকাশ কারাট করবেন।

তবে, গ্যালারিতে কাদের স্থান থাকবে, তা নিয়ে সিপিএমের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। যেখানে একদিকে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, সেখানে অন্যদিকে, শাসক দলের পক্ষ থেকেও এই বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এই গ্যালারির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, জ্যোতি বসুর রাজনৈতিক ও সামাজিক অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। তাঁর জীবনের নানা দিক, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনৈতিক প্রভাব এবং তাঁর প্রশাসনিক কৌশলকে তুলে ধরার জন্য এই গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। তবে, বর্তমান রাজনীতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা এবং তাঁর সিপিএমের প্রতি সম্পর্কের প্রশ্ন আসলে একটি আলোচনার নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছে।

এখন দেখা যাবে, সিপিএম এই বিষয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ কীভাবে নেয় এবং গ্যালারির সামগ্রিক উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তুর উপর এর প্রভাব কী পড়বে।

মহাকুম্ভের প্রান্তরে বেজে চলেছে মহা ভারতের সুর

Read more

Local News