Monday, December 1, 2025

‘জ্যাভলিন’ হাতে টিটিপি! পাকিস্তানে যুদ্ধের ছায়া আরও গাঢ়

Share

‘জ্যাভলিন’ হাতে টিটিপি!

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ফের উথলে উঠেছে বিদ্রোহের স্রোত। তবে এ বার পরিস্থিতি অন্য রকম। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিধ্বংসী ‘জ্যাভলিন’ ক্ষেপণাস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। এমনই এক ভিডিয়ো প্রকাশ করে পাক সেনাকে সরাসরি হুমকি ছুড়েছে এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

ভিডিয়োতে দেখা গেছে, টিটিপি যোদ্ধারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে কাঁধে বয়ে নিয়ে ছোঁড়া যায় এমন ভয়ানক ‘জ্যাভলিন’ ক্ষেপণাস্ত্র চালানোর। শুধু তাই নয়, আত্মঘাতী ড্রোনও এখন তাদের অস্ত্রভাণ্ডারে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই রাতের ঘুম উড়েছে ইসলামাবাদের।

আমেরিকার হাতিয়ার, তালিবানের জোগান

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় যুক্তরাষ্ট্র বিপুল পরিমাণে অস্ত্র ফেলে গিয়েছিল। তালিবান সেই সব অস্ত্র নিজের দখলে নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্রও। পাকিস্তান দাবি করছে, আফগান তালিবানই এই জ্যাভলিন সরবরাহ করেছে টিটিপিকে।

কী ভয়ানক এই ‘জ্যাভলিন’?

১৯৯৬ সাল থেকে মার্কিন সেনার সঙ্গে থাকা এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের বহু যুদ্ধে নিজের বিধ্বংসী ক্ষমতা প্রমাণ করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনীয় বাহিনী এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রুশ ট্যাঙ্ক গুঁড়িয়ে দেয়। এটি ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’ প্রযুক্তির অর্থাৎ একবার ছোঁড়া হলে তা ফেরত আনার উপায় নেই। এর পাল্লা প্রায় ২.৫ কিলোমিটার এবং এটি হেলিকপ্টার, বাঙ্কার, এমনকি সাঁজোয়া যানও গুঁড়িয়ে দিতে পারে।

পাকিস্তানের উদ্বেগ

টিটিপির হাতে এমন অস্ত্র থাকায় সীমান্তে যেকোনো সময় বড় হামলা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পাক সেনার সাবেক জেনারেল খালেদ জামাল আনসারি। তাঁর মতে, সীমান্ত পোস্ট কিংবা সেনা কনভয় এখন সরাসরি নিশানায় পরিণত হতে পারে। এমনকি, জমি হারানোর আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকেরা।

পাল্টা আঘাতে নেমেছে পাক সেনা

টিটিপির এই বাড়বাড়ন্ত রুখতে পাকিস্তানও চুপ করে বসে নেই। ১০ এপ্রিল লোয়ার দির জেলার তিমেরগারা পাহাড়ে টিটিপির বিরুদ্ধে অভিযানে নামে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী। ইসলামাবাদ দাবি করেছে, এই অভিযানে টিটিপির শীর্ষ নেতা খারজি হাফিজুল্লা-সহ একাধিক জঙ্গি নিহত হয়েছে।

শান্তি আলোচনার ভাঙন, যুদ্ধের ঘোষণা

২০২২ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদ ও টিটিপির মধ্যে শান্তি আলোচনা ভেস্তে গেলে, প্রকাশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে টিটিপি। তারপর থেকেই তারা নানা সময়ে আত্মঘাতী হামলা ও বাঙ্কার ধ্বংসের মতো ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। এখন ‘জ্যাভলিন’-এর মতো শক্তিশালী অস্ত্র হাতে থাকায় তাদের ক্ষমতা বহুগুণে বেড়েছে।

শেষ কথা:
পাকিস্তানের অন্দরমহলে এখন স্রেফ বিদ্রোহ নয়, আসন্ন যুদ্ধের আতঙ্ক। টিটিপির হাতে মার্কিন প্রযুক্তি পৌঁছে যাওয়ার পর প্রতিটি সংঘর্ষ হয়ে উঠছে আরও মারাত্মক। এখন দেখার, ইসলামাবাদ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে কতটা প্রস্তুত।

ট্রাম্প বনাম জিনপিং: শুল্কযুদ্ধে কোন পক্ষ প্রথম পিছু হটবে?

Read more

Local News