জেলবন্দি পার্থ ‘সাইলেন্ট’!
দুর্নীতির অভিযোগে আড়াই বছর ধরে জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন রাজনীতির একেবারে প্রান্তে। কিন্তু বেহালা পশ্চিমে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস যে দশটি ওয়ার্ডের সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেছে, সেখানে স্পষ্ট তাঁর দীর্ঘ দিনের প্রভাব। নতুন তালিকায় উঠে এসেছে একের পর এক ‘পার্থ অনুগামী’র নাম।
এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে ঘোষিত এই তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজন সভাপতি পদে বহাল আছেন বহু পুরনো নাম, যাঁদের পার্থের ঘনিষ্ঠ বলেই দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত বেহালার তৃণমূল মহলে। আবার নতুন করে দায়িত্ব পাওয়া অনেকেই অতীতে পার্থের সান্নিধ্যে রাজনীতিতে উঠে এসেছেন।
**‘ঘনিষ্ঠ’দের গুরুত্ব কেন?**
বেহালা পশ্চিমের এক তৃণমূল নেতা জানিয়েছেন, “পার্থ পাঁচবারের বিধায়ক। ফলে তাঁর সঙ্গে যে অনেকেরই পুরনো রাজনৈতিক যোগাযোগ ছিল, সেটা স্বাভাবিক। তবে এখন সকলে অতীত ভুলে আগামীর রাজনীতিতে মন দিচ্ছেন।”
তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল শক্ত ভিত গড়তে চায়। সেই কারণে বাছাই করা নেতাদের মধ্যে যাঁরা এলাকায় পরিচিত, সংগঠন জানেন, তাঁদেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে—even যদি তাঁরা পার্থ ঘনিষ্ঠ হন।
কে কোথায় দায়িত্বে?
- ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডে সভাপতি পদে বহাল আছেন অঞ্জন চক্রবর্তী—পার্থ অনুগামী হিসেবেই পরিচিত।
- ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিনের সভাপতি অশোক মণ্ডলের জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন অংশুকুমার চট্টোপাধ্যায়। বয়স ৭০’র উপর হলেও, তাঁর অতীত পার্থ-যোগই তাঁর নিয়োগে ভূমিকা রেখেছে বলে দলীয় সূত্রে দাবি।
- ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডে মিহির বসাকের পরিবর্তে সভাপতি হয়েছেন বিশ্বজিৎ অধিকারী—তিনিও পার্থ ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
- ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডে, প্রয়াত শিপ্রা ঘটকের জায়গায় সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন যুব সংগঠনের প্রাক্তনী সুদীপ রায়, যাঁর রাজনৈতিক উত্থানে পার্থের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
- ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডে সভাপতি পদে বহাল উৎপল দত্ত—আবারও পার্থ অনুগামী।
- ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সভাপতি হয়েছেন সঞ্জীব রাজ, যাঁর নিয়োগে প্রাক্তন কাউন্সিলর পার্থ সরকার ওরফে ‘ভজা’র সম্মতি ছিল বলে জানা যাচ্ছে।
- ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডে অভিজিৎ দে-কে ফের দায়িত্বে রাখা হয়েছে। এক সময় তিনিই ছিলেন পার্থর সবচেয়ে ভরসার ব্যক্তি, সঞ্চিতা মিত্রের থেকেও বেশি।
কী বলছে রাজনৈতিক মহল?
অনেকেই মনে করছেন, পার্থ রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় হলেও বেহালার সংগঠনে তাঁর তৈরি কাঠামো আজও কার্যকর। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—দল কি অতীত সম্পর্ক ছেঁটে নতুন মুখ আনতে পারছে না? না কি নির্বাচনের আগে স্থিতাবস্থা বজায় রাখাই লক্ষ্য?
যাই হোক, বেহালার রাজনীতিতে এই সভাপতি নির্বাচনের মাধ্যমে স্পষ্ট যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় নামটা এখনো ‘ঘোষণাহীন ছায়া’ হয়ে রয়ে গিয়েছে তৃণমূলের সংগঠনে। যদিও দল তা স্বীকার করতে চায় না, বাস্তব বলছে অন্য কথা।
পুরুষের ত্বকে ক্যানসারের ঝুঁকি ৫০% বেশি! সানস্ক্রিন মাখছেন ঠিকঠাক?