Tuesday, May 13, 2025

জেএনইউ-র পর এবার যাদবপুর লক্ষ্য এবিভিপির, বামেরা আত্মসমালোচনায় ব্যস্ত

Share

জেএনইউ-র পর এবার যাদবপুর লক্ষ্য এবিভিপির

দিল্লির জেএনইউতে ইতিহাস গড়ার পর এবিভিপি এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে কোমর বেঁধে নেমেছে। বামেরা যেখানে ভোটে সামান্য ব্যবধানে জিতেছে, সেখানে নিজেদের ভাগ করা সিদ্ধান্তের খেসারতও দিতে হয়েছে তাদের। এসএফআইয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং বিভাজনের সুযোগ নিচ্ছে এবিভিপি, যারা ইতিমধ্যেই যাদবপুর ক্যাম্পাসে রামনবমীর আয়োজন করেও নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাম নেতৃত্বে চলছে তীব্র আত্মসমালোচনা ও দোষারোপের পালা।

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র সংসদ ভোটে এবিভিপির (অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ) উত্থান অনেককেই চমকে দিয়েছে। যুগ্ম সম্পাদক পদে জয় ছাড়াও, এবিভিপি ৪২টি কাউন্সিলর পদের মধ্যে ২৩টি দখল করে নিয়েছে। এত বড় মাইলফলকের পর তাদের চোখ এখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। দক্ষিণবঙ্গের এবিভিপি নেতা অনিরুদ্ধ সরকার বলেই দিয়েছেন— ‘‘জেএনইউ হয়েছে, এবার যাদবপুর হবে।’’

জেএনইউতে যদিও মূল তিনটি পদে জয় পেয়েছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের জোট, তবুও সেই জোটে ছিল না সিপিএম ঘনিষ্ঠ এসএফআই। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যদি এসএফআই এই জোটে অংশ নিত, তাহলে এবিভিপি এতটা ছাপ ফেলতে পারত না। এখন বাম নেতৃত্বের মধ্যেই চলছে দ্বন্দ্ব— কেন জোট গঠন হয়নি? এসএফআইয়ের অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, অহংবোধ ও নেতৃত্বের বিভ্রান্তি জোট না হওয়ার মূল কারণ।

এসএফআইয়ের এক সর্বভারতীয় নেতা সরাসরি বলেন, ‘‘নিজেদের গোঁয়ার্তুমির জন্যই এই ফল হল। ইগোর লড়াইয়ে সংগঠন বিপদে পড়েছে। অনেক বিভাগেই প্রার্থীরা ১৮-১৯ নম্বরে রয়েছে, যা প্রমাণ করে মাটির সঙ্গে সংযোগ নেই।’’ এমন কঠোর আত্মসমালোচনা অনেকেই আগে কল্পনাও করেননি।

এই রাজনৈতিক আবহে এবিভিপি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে মরিয়া। যদিও এখনো পর্যন্ত তারা প্রান্তিক, তবুও গত ৬ এপ্রিল ক্যাম্পাসে রামনবমীর পুজো আয়োজন করে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— তারা চুপ করে বসে নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রবেশপথে রামের পুজো এবং হনুমানের ছবি টাঙিয়ে তারা ক্যাম্পাসের বামপন্থী আবহে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।

এসএফআইয়ের প্রাক্তনী সৃজন ভট্টাচার্য পাল্টা বলেন, ‘‘জেএনইউ আর যাদবপুর এক নয়। এখানে বাম আদর্শের শিকড় অনেক গভীরে। কিছু অবাংলাভাষী ছাত্রকে জুটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দখল করা সহজ হবে না।’’ তবে এবিভিপি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে— ‘‘যাদবপুরে আমরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করবই।’’

গত বছর জেএনইউতে বামপন্থীদের জয়ের পর আনন্দবাজার ডট কমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসএফআই নেত্রী ঐশী ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘সব আসনে বাম ছাত্র জোট এগিয়ে।’’ তবে এক বছরের ব্যবধানে সেই জোট ভেঙে এবিভিপির উত্থান সত্যিই বড় ধাক্কা। আর সেই ধাক্কার ঢেউ এবার গড়াতে চলেছে যাদবপুরের দেয়ালে।

বিএসএফ কর্তাদের আশ্বাসেও থেমে নেই উৎকণ্ঠা, সোমবার পঞ্জাব যাচ্ছেন পূর্ণমের স্ত্রী

Read more

Local News