Monday, December 1, 2025

জিএসটি সংস্কার: শুধু ৫% আর ১৮% কর, মদ-সিগারেটে সর্বোচ্চ ৪০%

Share

জিএসটি সংস্কার!

দেশের পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এত দিন চারটি হারে জিএসটি চালু থাকলেও, এবার তা সীমিত হয়ে দাঁড়াচ্ছে মাত্র দুটি হারে— ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ। অর্থাৎ ১২ এবং ২৮ শতাংশ হারের জিএসটি তুলে দেওয়ার প্রস্তাবে সায় দিল ছয় সদস্যের মন্ত্রিগোষ্ঠী। তবে ক্ষতিকর ও বিলাসবহুল কিছু পণ্যের জন্য আলাদা ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে। সেই তালিকায় মদ, সিগারেট, বিলাসবহুল গাড়ির মতো জিনিসের উপর সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ কর ধার্য করার পরিকল্পনা হয়েছে।

বৈঠকে কী আলোচনা হলো

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের নেতৃত্বে মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধরি, পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সহ আরও কয়েকজন প্রতিনিধি। কেন্দ্রের প্রস্তাবে সকলে মূলত সম্মতি দিলেও, প্রত্যেক রাজ্যের পক্ষ থেকে কিছু অতিরিক্ত প্রস্তাবও উঠে এসেছে। এখন সেই সুপারিশগুলি যাবে জিএসটি কাউন্সিলে, যা সেপ্টেম্বরে বসতে পারে।

প্রস্তাবিত নতুন কর কাঠামো

বর্তমানে দেশে ৫, ১২, ১৮ এবং ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি প্রযোজ্য। কোনও কোনও পণ্যে শূন্য হারের ব্যবস্থাও রয়েছে। এবার ১২ এবং ২৮ শতাংশকে একেবারেই বাতিল করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্য ও পরিষেবায় ৫ বা ১৮ শতাংশ জিএসটি বসবে। তবে ‘সিন ট্যাক্স’-এর আওতায় মদ, সিগারেট, বিলাসবহুল গাড়ি, ঠান্ডা পানীয়, ফাস্ট ফুড, চিনি, কফি এমনকি পর্নোগ্রাফিকেও সর্বোচ্চ করের তালিকায় ফেলার প্রস্তাব উঠেছে। এই কর আরোপের উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে এ ধরনের পণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা।

রাজস্ব ক্ষতির আশঙ্কা

পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য সতর্ক করেছেন সম্ভাব্য রাজস্ব ক্ষতির বিষয়ে। তাঁর বক্তব্য, করের হার কমলে রাজস্ব আদায়েও প্রভাব পড়বে। তাই শুধু জিএসটি কমানোই যথেষ্ট নয়, ক্ষতিকর পণ্যে ৪০ শতাংশ করের বাইরে আরও কিছু বিশেষ কর বসানোর প্রস্তাবও তিনি দিয়েছেন।

বিমা খাতে কর প্রত্যাহারের প্রসঙ্গ

এই বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি নিয়ে। বর্তমানে বিমায় ১৮ শতাংশ কর প্রযোজ্য হলেও, সেটি পুরোপুরি তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। তবে এ নিয়ে চন্দ্রিমার বক্তব্য, শুধু কর প্রত্যাহার করলেই হবে না। বিমা সংস্থাগুলি যাতে এর সুযোগ নিয়ে গ্রাহকদের উপর প্রিমিয়াম বাড়িয়ে না দেয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। নইলে কর প্রত্যাহারের প্রকৃত সুফল সাধারণ মানুষ পাবেন না।

সামনে কী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ থেকে জিএসটি সংস্কারের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। দীপাবলির আগেই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলেও জানান তিনি। এবার সেই পথে আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র। এখন শুধু জিএসটি কাউন্সিলের অনুমোদনের অপেক্ষা।

সাধারণ মানুষের জন্য এই পরিবর্তন কতটা স্বস্তি বা চাপ বয়ে আনবে, তা কার্যকর হওয়ার পরই বোঝা যাবে। তবে মদ, সিগারেটের মতো ক্ষতিকর পণ্যে কর বাড়ার ফলে সেগুলি আরও দামী হবে, আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ক্ষেত্রে করের চাপ কিছুটা হলেও কমতে পারে।

অস্ত্রোপচারের পর মঞ্চে শাহরুখ: ছেলেকে ভালবাসার আর্জি বাদশার

Read more

Local News