জাপানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যচুক্তির ঘোষণা ট্রাম্পের!
বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন দিশা দেখিয়ে জাপানের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যচুক্তির কথা ঘোষণা করলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এই ঘোষণায় ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই চুক্তি শুধুমাত্র দুই দেশের অর্থনীতির জন্যই নয়, বিশ্ব বাণিজ্যের স্থিতিশীলতার দিক থেকেও এক বড় পদক্ষেপ।
চুক্তি অনুযায়ী, কৃষিপণ্য, শিল্পজাত দ্রব্য এবং ডিজিটাল বাণিজ্যে অনেকাংশে শুল্ক কমানো হয়েছে। এর ফলে মার্কিন কৃষকদের রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে গম, ভুট্টা, গরুর মাংসের মতো পণ্যে জাপানের বাজারে প্রবেশ সহজ হবে। ট্রাম্প বলেন, “আমাদের কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জন্য এটি একটি বিশাল জয়। বহুদিন ধরেই আমেরিকান কৃষকরা জাপানের বাজারে ঢুকতে চাচ্ছিলেন। এবার সেই সুযোগ আসছে।”
এই চুক্তির মাধ্যমে জাপানও বিশেষভাবে লাভবান হতে চলেছে। তাদের প্রযুক্তিপণ্য ও শিল্পজাত পণ্যের রপ্তানির ওপর থাকা যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু শুল্ক ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া হবে। ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও একটি নতুন যৌথ কাঠামো গঠনের কথা বলা হয়েছে, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বাণিজ্য আরও মসৃণ হবে।
চুক্তি ঘোষণার সময় হোয়াইট হাউসে উপস্থিত ছিলেন জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও। তিনি বলেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করছি বিশ্ব অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে। এই বাণিজ্যচুক্তি তারই প্রতিফলন।” তিনি আরও বলেন, “আমেরিকা ও জাপান—দু’দেশের স্বার্থ রক্ষা করেই আমরা একত্রে এগোতে চাই।”
এই চুক্তি চূড়ান্ত করতে বেশ কয়েকমাস ধরেই দৌত্য চলে আসছিল। ট্রাম্প প্রশাসন শুরু থেকেই আমদানি-রপ্তানিতে ভারসাম্য রাখতে বাণিজ্যচুক্তিগুলিকে নতুন করে সাজানোর পক্ষে ছিল। চিনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, ট্রাম্প প্রশাসনের নজর যায় জাপানের দিকেও। সেখানে যাতে আমেরিকার পণ্যের জন্য বড় বাজার তৈরি করা যায়, সেই উদ্দেশ্যেই এই চুক্তির রূপরেখা তৈরি হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও এই চুক্তির প্রভাব পড়বে। কারণ দেশের কৃষিজ জনগোষ্ঠীর এক বড় অংশ ট্রাম্পকে সমর্থন করে। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবিই ছিল—নতুন বাজারে প্রবেশের সুযোগ এবং চীন নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প পথ খোঁজা। এই চুক্তি সেই দিকেই এক বড় পদক্ষেপ।
তবে সমালোচনাও কম হয়নি। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এই চুক্তি টোটাল ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট নয়, বরং আংশিক। এতে আরও কিছু বিষয় যুক্ত করা উচিত ছিল, যেমন—গাড়ি শিল্প, সেবা খাত ইত্যাদি। তবুও বর্তমান বাণিজ্য যুদ্ধের আবহে এই চুক্তিকে স্বস্তির বার্তা হিসেবেই দেখছেন অনেকে।
এক কথায়, আমেরিকা-জাপান বাণিজ্যচুক্তি শুধুই দুই দেশের মধ্যে পণ্য আদানপ্রদানের চুক্তি নয়, এটি দুই দেশের অর্থনৈতিক বন্ধুত্বেরও প্রতীক। বিশ্ব যখন বাণিজ্য অনিশ্চয়তায় টালমাটাল, তখন এই চুক্তি এক আশার আলো দেখাল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালোবাসার ছবি, খোলাখুলি রোম্যান্সে মশগুল সোনাক্ষী-জহির

