ভক্তদের জন্য অসম সরকারের বিশেষ উদ্যোগ
প্রিয় সঙ্গীতপ্রেমী জ়ুবিন গার্গের জন্য অসমের সোনাপুরের কামারকুচিতে মঙ্গলবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। হাজার হাজার অনুরাগী পথে নেমে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এই দিনে শুধু শেষকৃত্যই নয়, বরং অসম সরকারও ভক্তদের কথা মাথায় রেখে একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জ়ুবিনের স্মৃতিকে চিরস্থায়ী করতে কামারকুচিতে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হবে।
তবে অসম সরকার এখানে থেমে থাকছে না। শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী রণোজ পেগু জানিয়েছেন, জ়ুবিনের অস্থিভস্ম অনলাইনের মাধ্যমে ভক্তদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “সরকার একটি পোর্টালের ব্যবস্থা করছে, যার মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থা বা ভক্তরা তাঁদের প্রিয় শিল্পীর অস্থিভস্ম প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।” সংস্থাগুলোকে অস্থিভস্ম দেওয়ার পরও যদি কিছু অংশ অবশিষ্ট থাকে, তবে সাধারণ ভক্তরাও সেই আবেদন করতে পারবেন। এই পোর্টাল আগামী দু’দিনের মধ্যে চালু হবে এবং অস্থিভস্ম রাখা হবে সংস্কৃতি দফতরের দায়িত্বে।
সাধারণ শ্রদ্ধার পাশাপাশি জ়ুবিনের স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হবে জোরহাট শহরেও। সেখানে কিছু অংশ অস্থিভস্ম পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। মৃত্যুর ১৩ দিনের রীতি অনুযায়ী কিছু আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানও জোরহাটে সম্পন্ন হবে।
জ়ুবিনের আকস্মিক মৃত্যু সিঙ্গাপুরে ঘটে। স্কুবা ডাইভিং করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখানে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। রবিবার তাঁর মরদেহ পৌঁছায় গুয়াহাটিতে। কাতারে কাতারে মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় জমান। মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে ভেঙে পড়তে দেখা যায় জ়ুবিনের স্ত্রী গরিমাকে। মঙ্গলবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময়ও তিনি স্বামীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গিয়েছে।
জ়ুবিনের বিশেষ প্রিয় ছিল পান ও সুপারি। শেষকৃত্যেও সেই প্রথা মেনে গরিমা স্বামীর প্রতি সম্মান জানিয়েছেন।
অসম সরকারের এই উদ্যোগ—স্মৃতিসৌধ তৈরি এবং অস্থিভস্ম ছড়িয়ে দেওয়া—প্রমাণ করছে, তারা ভক্তদের অনুভূতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। জ়ুবিনের সঙ্গীত ও জীবনযাত্রা যাতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে, তার জন্য এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
এভাবে অস্থিভস্ম ভক্তদের হাতে পৌঁছালে, জ়ুবিনের প্রতি শ্রদ্ধা শুধু একটি স্মৃতি নয়, বরং জীবন্ত অনুভূতি হয়ে থাকবে। কামারকুচি ও জোরহাটে তৈরি স্মৃতিসৌধও সেই প্রিয় শিল্পীর নাম স্মরণে চিরকাল টিকে থাকবে। জ়ুবিন গার্গের জীবন এবং তার সঙ্গীত তার ভক্তদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
ব্যালকনির উপর উড়ালপুল! নাগপুরের সেতু স্মরণ করাচ্ছে ভোপালের ৯০ ডিগ্রি রেলসেতুর ঘটনার কথা

