বাড়িতে থাকার পরামর্শ প্রশাসনের
ভারী বর্ষণে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গুরুগ্রাম। সোমবার বিকেলের পর থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে শহরের একাধিক এলাকা ডুবে গিয়েছে হাঁটু বা গোঁড়ালি সমান জলে। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের। কোথাও সাত থেকে আট কিলোমিটার দীর্ঘ যানবাহনের লাইন তৈরি হয়েছে, যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। রাস্তায় গাড়ি ঘোরানো বা বিকল্প রাস্তা নেওয়ার সুযোগও নেই।
গুরুগ্রামের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শহরে ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ মৌসম ভবন ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। এর জেরে প্রশাসন কমলা সতর্কতা জারি করেছে এবং শহরের অফিসগুলোকে কর্মীদের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে স্কুলগুলিকে মঙ্গলবার অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৃষ্টি ও জল জমে যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেক যাত্রী বৃষ্টির মধ্যে ভিজে এবং হাঁটুসমান জল পেরিয়ে কোনওরকমে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন। অফিসফেরত যাত্রীরা বিশেষভাবে সমস্যায় পড়েছেন। এমনকি, জলমগ্ন রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অনেকটাই কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
সোমবারের বৃষ্টি-পরবর্তী দুরবস্থার ছবি ও ভিডিও ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও সেগুলির সত্যতা সরকারি ভাবে যাচাই করা হয়নি, তবুও ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, জলমগ্ন রাস্তায় আটকে থাকা গাড়ির সারি এবং জল কেটে হাঁটতে থাকা মানুষের অসহায় অবস্থা।
প্রশাসন জানিয়েছে, ময়দানি কর্মীরা লাগাতার কাজ করছেন জল সরানোর জন্য। তবে এত অল্প সময়ে এত বিপুল পরিমাণ বৃষ্টিপাতের ফলে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় বাইরে না বেরোনোর অনুরোধ করা হয়েছে।
শহরের ব্যস্ত এলাকা, অফিস পাড়া এবং আবাসিক কমপ্লেক্স—সব জায়গাতেই বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে। রাস্তায় জমা জল শুধু যানজটই সৃষ্টি করেনি, অনেক জায়গায় বিদ্যুতের তার এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকেও বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জরুরি পরিষেবার কর্মীরাও যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন নাগরিকদের সহায়তা করতে।
গুরুগ্রামের প্রশাসন জানিয়েছে, মঙ্গলবার বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। তাই নাগরিকদের সতর্ক থাকতে এবং সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী কয়েকদিন আবহাওয়ার উন্নতি না হলে আরও জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও প্রশাসনের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
গুরুগ্রামে এই অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত এবং জলজট শহরবাসীর দৈনন্দিন জীবন একেবারে থামিয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে অফিসকর্মী—সবাই এখন প্রশাসনের তৎপরতা এবং আবহাওয়ার উন্নতির আশায় দিন গুনছেন।
ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

