সতীর্থদের উপহারে আপ্লুত আন্দ্রে রাসেল!
জন্মদিনে কে না চায় একটা স্পেশাল উপহার? কারও হয়তো নতুন ঘড়ি, কারও আবার স্রেফ একটা শুভেচ্ছা। কিন্তু আন্দ্রে রাসেলের চাওয়া ছিল একটু আলাদা। ৩০ এপ্রিল, নিজের ৩৭তম জন্মদিনে তিনি চাইছিলেন একটা “জয়”—তাও আবার ক্রিকেট মাঠে, প্রতিপক্ষ দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে। আর সতীর্থরা কি আর রাসেলের ইচ্ছা ফেলতে পারে? একদম না!
মঙ্গলবার দিল্লি বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্সের হাইভোল্টেজ ম্যাচে ঠিক সেটাই হল। ১৪ রানে জয় তুলে নিল কেকেআর, আর রাসেলের মুখে ফুটে উঠল তৃপ্তির হাসি। ম্যাচ শেষে রাসেল নিজেই বললেন, “সবার কাছে বলেছিলাম, আমাকে একটা জন্মদিনের উপহার দাও। তোমরা সেটা দিয়েছ। সবাইকে ধন্যবাদ!”—এই কথার মধ্যেই যেন মিশে আছে ভরপুর আনন্দ আর কৃতজ্ঞতা।
জয় নয়, যেন আবেগের জয়
জন্মদিনেই ম্যাচ খেলতে নামা, তার উপর জয়—রাসেলের কথায়, “এই টি-টোয়েন্টি লিগটা অসাধারণ। এমন এক দিনে জয় পাওয়া সত্যিই স্পেশাল।” শুধু আবেগ নয়, খেলায় পারফরম্যান্সও ছিল চোখে পড়ার মতো। বল হাতে পরিকল্পনা ছিল ছ’টি ইয়র্কার করার, যদিও পুরোটা সফল না হলেও, তিন-চারটি ইয়র্কারই ম্যাচ ঘোরানোর পক্ষে যথেষ্ট ছিল।
রাসেল বলেন, “আমাদের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। সবাই চেষ্টা করছিল, কিন্তু তিন-চারজন ব্যাটার ভালো রান না করলে জয় আসছিল না। এই ম্যাচে আমরা নিজের মতো খেলতে পেরেছি, ফলটাও মিলেছে।”
‘নারাইন-বরুণ’ জুটির ম্যাজিক
জয়ের পিছনে রাসেলের মতে, সবচেয়ে বড় অবদান সুনীল নারাইন এবং বরুণ চক্রবর্তীর। ১৪তম ওভারে নারাইন দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন, যা কেকেআরকে ম্যাচে ফেরায়। বরুণও তাঁর স্পিন ম্যাজিক ছড়িয়ে দেন, এক ওভারে দুটি উইকেট তুলে নিয়ে দিল্লিকে চাপে ফেলে দেন।
“আমাদের টিম কিন্তু দুর্দান্ত,” বলেন রাসেল, “যদি ২০০ রান তুলি, সেটা ডিফেন্ড করার ক্ষমতা আমাদের আছে।”
‘চুপচাপ’ নেতা নারাইনের প্রশংসা
রাসেল বিশেষভাবে প্রশংসা করেন নারাইনের, “অনেকে ভাবে ও গা লাগিয়ে খেলে না, কিন্তু সেটা ঠিক নয়। ও বরং চাপের মধ্যে অসাধারণ পারফর্ম করে। এখন অনেক বেশি কথা বলে, দলের মধ্যে ওর প্রভাব অনেক বেড়েছে।”
জন্মদিনে উপহারের থেকেও বড় প্রাপ্তি
জয় যে কেবল একটা সংখ্যা নয়, তা আন্দ্রে রাসেল বুঝিয়ে দিলেন। দলের কাছে একটা ছোট্ট আবদার, আর সতীর্থদের মিলিত প্রয়াসে জন্মদিনটা হয়ে উঠল স্মরণীয়। রাসেল শেষ কথায় বলেন, “এই জয়টা আমি সারা জীবন মনে রাখব। এমন উপহার বারবার পাওয়া যায় না!”
এটাই তো ক্রিকেটের আসল সৌন্দর্য—শুধু ব্যাট বলের খেলা নয়, আবেগ, বন্ধুত্ব আর স্বপ্নপূরণের গল্পও। আর সেই গল্পের নায়ক মঙ্গলবার ছিলেন কেকেআরের এক এবং অদ্বিতীয় আন্দ্রে রাসেল!

