Monday, December 1, 2025

ছুরিকাহত বাবাকে দেখে কী বলেছিলেন সইফ? সেই প্রথম কথার স্মৃতি আজও নাড়া দেয় ইব্রাহিমকে

Share

ছুরিকাহত বাবাকে দেখে কী বলেছিলেন সইফ?

বছরের শুরুতেই বলিউডে চমকে দেওয়া এক ঘটনা—হাসপাতালে ছুরিকাহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছিলেন অভিনেতা সইফ আলি খান। চারপাশে তীব্র চাঞ্চল্য, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। হাসপাতালের বেডে শুয়ে রক্তাক্ত সইফকে দেখতে ছুটে যান ছোট পুত্র তৈমুর, কিন্তু সেই সময় বাবার পাশে থাকতে পারেননি সইফের বড় ছেলে ইব্রাহিম আলি খান।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার কথা মনে করে আবেগে ভেসে যান ইব্রাহিম। বলেন, “সেই রাতে আমি শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম। রাত আড়াইটে নাগাদ বাবার উপর হামলার খবর আসে, কিন্তু আমি সেটা জানতে পারি ভোর সাড়ে পাঁচটায়। খবর পাওয়া মাত্রই আমি এক মুহূর্ত দেরি না করে ছুটে যাই হাসপাতালে। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি।”

হাসপাতালের সেই প্রথম মুহূর্তটা এখনও স্পষ্ট ইব্রাহিমের মনে। “বাবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে আমি একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি শুধু ওঁর হাতটা ধরেছিলাম। তখন বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, ‘তুই ঠিকঠাক আছিস তো?’ ওই অবস্থায় থেকেও বাবা প্রথমে আমার কথা ভাবছিলেন, এটা আমার হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল,” বললেন ইব্রাহিম।

এই ঘটনায় শুধু একজন পুত্র হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবেও অনেক কিছু শিখেছেন বলে জানান ইব্রাহিম। “জীবনে কী গুরুত্বপূর্ণ, কারা আমাদের আসল সম্পদ—এই ঘটনাটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। আমরা অনেক সময় খুব তুচ্ছ জিনিস নিয়ে রাগ করি বা দূরত্ব তৈরি করি, কিন্তু এইরকম একটা মুহূর্ত বুঝিয়ে দেয়, সম্পর্কই সব থেকে বড়,” বলেন তিনি।

ঘটনার সময় সইফের পাশে ছিল তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র তৈমুর। ছোট্ট তৈমুরের কাছে বিষয়টা কতটা ভয়াবহ ছিল, সে কথাও উঠে আসে ইব্রাহিমের মুখে। “তৈমুর তখনও বুঝে উঠতে পারেনি পুরো ঘটনা। ও শুধু ভয় পেয়ে বাবার হাত ধরে ছিল। কিন্তু ও যে সাহস দেখিয়েছে, তাতে আমি খুব গর্বিত। ও আমার থেকেও আগে পৌঁছে গিয়েছিল বাবার কাছে।”

সেই ঘটনার পর ইব্রাহিম আর কখনওই সময়ের গুরুত্ব ভুলে যাননি। “আমি বুঝে গিয়েছিলাম, এক মিনিট দেরিও কখনও কত বড় অনুশোচনার কারণ হতে পারে। তখন থেকে চেষ্টা করি, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে, আর তাঁদের কাছে থাকি যতটা সম্ভব,” বললেন তিনি।

সইফ এখন সুস্থ আছেন, ধীরে ধীরে কাজে ফিরেছেন। কিন্তু ইব্রাহিমের কাছে সেই রাত চিরকাল মনে গেঁথে থাকবে। বাবার বলা একটি মাত্র লাইন—“তুই ঠিকঠাক আছিস তো?”—আজও তাঁর ভিতরটা কাঁপিয়ে দেয়।

এই ঘটনা প্রমাণ করে, তারকা হোক বা সাধারণ মানুষ, এক বাবা-পুত্রের সম্পর্কের আবেগ, উদ্বেগ, আর ভালোবাসা—সব সময়ই সমান। কোনো আড়ম্বর নয়, শুধু নিঃশব্দে বলা কিছু কথা, আর হাত ধরে থাকা—এই তো আসল ভালোবাসা।

বিরাট কোহলির বিদায়: এক অধ্যায়ের সমাপ্তি, রেখে গেলেন প্রশ্নের রেশ

Read more

Local News