ফরাসি মডেল থাইলেন ব্লন্ডোর জৌলুসময় সফর
মাত্র ছয় বছর বয়সে এক ভাইরাল ছবিতে বিশ্বের নজর কাড়েন থাইলেন ব্লন্ডো। নীলচে চোখ, সোনালি চুল, ও নিখুঁত মুখাবয়বের ছোট্ট এই ফরাসি কন্যা তখনই পেয়ে যান ‘বিশ্বের সেরা সুন্দরী’ তকমা। এরপর বয়স মাত্র দশ পেরোতেই বিখ্যাত ফ্যাশন ম্যাগাজিন Vogue Paris-এর প্রচ্ছদে জায়গা করে নেন তিনি। তিনিই সেই সময়কার সর্বকনিষ্ঠ মডেল, যিনি এই গ্ল্যামার জগতের মুকুটে এক অনন্য পালক যোগ করেন।
তিন বছর বয়সেই থাইলেনের মডেলিং প্রতিভা চিনে ফেলেছিলেন বিখ্যাত ডিজাইনার জঁ পল গলতিয়ে। তাঁর চেহারায় এক অপার্থিব সৌন্দর্য ছিল— যা সহজেই নজর কাড়তে বাধ্য। এক বছরের প্রস্তুতির পর মাত্র চার বছর বয়সে মার্জার সরণীতে হাঁটেন তিনি।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে থাইলেন হয়ে উঠেছেন আরও পরিণত, আরও অনন্য। এখন তিনি ২৪-এর যুবতী। কিন্তু তাঁর সৌন্দর্যে এখনও সেই সরলতা ও মোহ রয়েছে। কৈশোরেই বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড যেমন ডলচে গাবানা, ভারসাচি, ল’রিয়্যাল প্যারিস, মিউ মিউ-এর সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেন তিনি।

পারিবারিক প্রেক্ষাপটেও জৌলুসময় পরিবেশ
থাইলেন জন্মেছিলেন এক খ্যাতনামা পরিবারে— তাঁর বাবা প্যাট্রিক ব্লন্ড, ফরাসি প্রিমিয়ার লিগের প্রাক্তন ফুটবলার এবং মা ভেরোনিকা লুব্রি একজন জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক ও ফ্যাশন ডিজাইনার। ২০১৮ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হলেও, থাইলেন মা-বাবার খ্যাতির প্রভাবেই সহজেই ফ্যাশন দুনিয়ায় প্রবেশের সুযোগ পান।
ইনস্টাগ্রামে বর্তমানে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ৭০ লক্ষেরও বেশি। তাঁর মা ভেরোনিকাও সেখানে যথেষ্ট জনপ্রিয়, আর মা-মেয়ের পারিবারিক মুহূর্ত শেয়ার করা বহু ছবিই অনুরাগীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
খ্যাতির পাশাপাশি সমালোচনা ও সংগ্রাম
বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী হলেও, থাইলেন কখনও নিজেকে সে চোখে দেখেননি। ২০১৮ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “লোকজন যখন বলেন আমি বিশ্বের সেরা সুন্দরী, তখন আমি বলি— আমি নিজেকে কখনওই তেমন ভাবিনি।”
তবে খ্যাতির সঙ্গে বিতর্কও এসেছে। মাত্র ১০ বছর বয়সে Vogue Enfants ম্যাগাজিনে পোজ দেওয়ার সময় তাঁর সাজসজ্জা ও পোশাক নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে ম্যাগাজিন। অনেকেই অভিযোগ তোলেন, তাঁকে প্রাপ্তবয়স্কের মতো করে সাজানো হয়েছিল। যদিও সেই বিতর্ক কখনও থাইলেনের অগ্রগতি আটকে রাখতে পারেনি।
সুন্দরী, মডেল ও ব্যবসায়ী— তিন ভূমিকায় উজ্জ্বল থাইলেন
‘TC Candler’-এর বিশ্বের ১০০ সুন্দরীদের তালিকায় একাধিকবার নাম উঠে এসেছে থাইলেনের, ২০১৮ সালে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। তবে জীবনে সবকিছুই মসৃণ ছিল না। ২০২১ সালে ডিম্বাশয়ে সিস্টের জটিলতায় একাধিক অস্ত্রোপচারের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাঁকে। সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করে ভক্তদের সচেতন থাকার বার্তাও দেন।
বর্তমানে তিনি কেবল মডেল নন, একজন সফল উদ্যোক্তাও। তাঁর নিজস্ব ফ্যাশন ব্র্যান্ড রয়েছে এবং হলিউডের তারকাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন। ২০২০ সাল থেকে ফরাসি অভিনেতা বেন অ্যাটালের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন, যাঁদের একাধিক ফ্যাশন ইভেন্টে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে।
থাইলেন ব্লন্ডোর জীবন যেন এক রূপকথার গল্প— যেখানে রয়েছে আলো, ছায়া, সাফল্য ও সংগ্রামের নিখুঁত মেলবন্ধন।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের সম্ভাবনা, আগামী সপ্তাহে দক্ষিণের ছয় জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি

