মাথার পুরস্কার মূল্য ৮০ লক্ষ টাকা
ছত্তীসগঢ়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযানে মাওবাদী শীর্ষনেতাদের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে দুই কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের। নিহতদের নাম রাজু দাদা ওরফে কাট্টা রামচন্দ্র রেড্ডি (৬৩) এবং কোসা দাদা ওরফে কাদারি সত্যনারায়ণ রেড্ডি (৬৭)। উভয়ই একসময় তেলঙ্গানার করিমনগর জেলার বাসিন্দা ছিলেন এবং তাঁদের মাথার উপর ৪০ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অভিযানের প্রশংসা করে বলেন, “এটি নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য একটি বড় জয়।” অন্যদিকে, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই উল্লেখ করেন, “নকশালপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি নির্ণায়ক সাফল্য।”
নারায়ণপুর জেলার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট রবিনসন গুরিয়ার বক্তব্য অনুযায়ী, সোমবার সকালে মহারাষ্ট্র সীমান্ত সংলগ্ন অবুঝমাঢ় অঞ্চলের জঙ্গলে তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান শুরু করা হয়। মাওবাদী নেতাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে নিরাপত্তাবাহিনী তল্লাশি চালায়।
প্রায় কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষের পরে দুই মাওবাদীর দেহ উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে পাওয়া যায় একে-৪৭ স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, ইনসাস রাইফেল, একটি বিজিএল (ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার), বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, মাওবাদী নথিপত্র, ক্যাম্পিং সরঞ্জাম এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।
এ বছরের শুরু থেকে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন মাওবাদী শীর্ষনেতা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চলপতি, সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নরসিংহচলম ওরফে সুধাকর এবং রবি বেঙ্কট লক্ষ্মী চৈতন্য ওরফে অরুণার। এবার সেই তালিকায় আরও দুই শীর্ষনেতার নাম যুক্ত হলো।
নিহত রাজু দাদা ও কোসা দাদার ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য দীর্ঘদিন ধরেই নজর রাখা হয়েছিল। তাঁদের কর্মকাণ্ড ছত্তীসগঢ় এবং আশেপাশের রাজ্যগুলিতে নকশালপন্থার সংগঠিত আক্রমণ ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিত। নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড এবং জঙ্গলে দীর্ঘদিনের কার্যক্রমের কারণে এই অভিযানটি অত্যন্ত জটিল ছিল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, “মাওবাদী সন্ত্রাস দমন এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমন অভিযানগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিরাপত্তা বাহিনীর দক্ষতা ও দৃঢ়তার প্রতীক।”
ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রীও উল্লেখ করেন, “এটি আমাদের রাজ্যে নকশালপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নির্ণায়ক মুহূর্ত।” স্থানীয় প্রশাসনও জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও মনিটর করা হচ্ছে এবং যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এভাবে, নারায়ণপুরে নিরাপত্তাবাহিনীর যৌথ অভিযানে মাওবাদী শীর্ষনেতাদের ধ্বংস ছত্তীসগঢ়ে নকশালপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ধরা হচ্ছে।
ব্যালকনির উপর উড়ালপুল! নাগপুরের সেতু স্মরণ করাচ্ছে ভোপালের ৯০ ডিগ্রি রেলসেতুর ঘটনার কথা

