Friday, January 31, 2025

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘিরে নতুন জট, উত্তাল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট, আফগানিস্তান ম্যাচ বয়কটের আহ্বান

Share

আফগানিস্তান

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসন্ন ম্যাচগুলি নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এইবারের সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু আফগানিস্তান এবং ইংল্যান্ড। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে পারে না জস বাটলারদের দল, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ব্রিটেনের অন্তত ১৬০ জন সাংসদ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অন্যতম অংশগ্রহণকারী দেশ আফগানিস্তানকে বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

তালিবান প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদদের ক্ষোভ

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ বয়কটের দাবির পেছনে মূল কারণ তালিবান সরকারের একাধিক বৈষম্যমূলক নীতি, বিশেষ করে মহিলাদের মানবাধিকার সংক্রান্ত নীতির বিরোধিতা। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সম্প্রতি এই ইস্যুতে তীব্র আলোচনা হয়। একাধিক রাজনীতিবিদ, যেমন নাইজেল ফারাজ, জেরেমি করবিন, এবং লর্ড কিনক, তালিবান প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তাঁদের দাবি, ইসিবিকে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ বয়কট করতে হবে, যাতে তালিবানের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো যায়।

আফগানিস্তান

রিচার্ড গোল্ড, হাউস অফ কমন্স ও হাউস অফ লর্ডসের এক সদস্য, বলেন, “তালিবানের অধীনে আফগানিস্তানে মহিলাদের প্রতি যে অবর্ণনীয় আচরণ করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমরা ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট কর্তাদের দৃঢ় অবস্থান নিতে আহ্বান জানাচ্ছি। এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন আমরা আর সহ্য করতে পারি না। আমাদের আফগান মহিলাদের প্রতি সমর্থন জানাতে হবে।”

এছাড়া, উল্লেখযোগ্য যে, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা থেকে বিরত রয়েছে। ইংল্যান্ডও যদি আফগানিস্তানকে বয়কট করে, তবে তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ভারতের অবস্থান

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে ইংল্যান্ড। তবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের চাপের কারণে যদি ইংল্যান্ড সেই ম্যাচ না খেলতে পারে, তাহলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এই ধরনের রাজনৈতিক বিবেচনায় যদি ক্রিকেটের মাঠেও প্রভাব পড়ে, তবে তা সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য নতুন সমস্যা সৃষ্টি করবে।

পূর্বে, পাকিস্তানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচগুলো পাকিস্তানে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ফলে, আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) ভারতীয় ম্যাচগুলি দুবাইতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রতিযোগিতা হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করার ব্যবস্থা করা হয়। তবে, এর পর আবার নতুন একটি সমস্যা সৃষ্টি হলো, যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

ব্রিটিশ সরকারের মনোভাব ও অন্যান্য দেশগুলির অবস্থান

ব্রিটিশ সরকারের তরফে একাধিক রাজনীতিবিদ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে থাকলেও, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পরিপ্রেক্ষিতে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে যে রাজনৈতিক এবং সামাজিক চাপ বাড়ছে, তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে। ক্রিকেট একটি আন্তর্জাতিক খেলা হলেও, যখন তা রাজনৈতিক সম্পর্কের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, তখন খেলাধুলার আদর্শ ও নীতির সম্মুখীন হয় নতুন চ্যালেঞ্জ।

ভবিষ্যত প্রস্তুতি এবং সমাধান

তবে একদিকে যেমন বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রিকেটের খেলাধুলায় প্রভাব ফেলছে, অন্যদিকে আইসিসি এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলো দ্রুত সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিগগিরই এই সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে খেলোয়াড়দের ওপর এর প্রভাব কীভাবে পড়বে, তা দেখা যেতে পারে।

এদিকে, পাকিস্তান এবং ভারতসহ অন্য দেশগুলির মধ্যে সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি হলেও, ক্রিকেটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ বার্তা প্রদান এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতি করার একটি সুযোগ রয়েই যাচ্ছে।

সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় পরিবহণ দফতর

Read more

Local News